একাদশ জাতীয় নির্বাচন, দুর্নীতি-মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিজয়, জানালেন আওয়ামী লীগ নেতারা
জিয়াউদ্দিন রাজু : একাদশ জাতীয় নির্বাচন দেশের সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিজয় হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। শনিবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির নিরঙ্কুশ বিজয় উদযাপনে আয়োজিত মহাসমাবেশে দলটির নেতারা এ দাবি করেন।
নেতারা জানান, দেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যাওয়ায় বিজয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ। দেশের জনগণ শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল তাই তার স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে জয়যুক্ত করেছে। নির্বাচনে পরাজিত শক্তিরা যতই চেষ্টা করুক, তাদের আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিবে না। এ সময় দ-িত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে এনে বিচারের দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন নেতারা।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। অভিনন্দন বার্তা পাঠ করেন ওবায়দুল কাদের। অভিনন্দন বার্তায় তিনি বলেন, ‘আপনি বলেছেন যুদ্ধাপরাধীদর বিচার হবে, আপনি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘৃণিত খুনিদের বিচার এ দেশের মাটিতেই হবে। কথা দিয়ে কথা রাখার সংস্কৃতি আপনি ফিরিয়ে এনেছেন। জনগণ তাদের রায়ের মধ্যে প্রমাণ দিয়েছে তারা স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে আরও একটি নতুন শতাব্দীর উপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আপনার প্রণীত ডেলটা প্লান নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আপনাকে অভিবাদন জানাচ্ছি’।
সমাবেশে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দেশ এখন সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। দেশ এখন স্বল্প উন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তর হয়েছে। জনগণ শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখে আবারও তাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে।
দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনার প্রতি আস্থার মাধ্যমে এই দেশে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা কায়েম হবে। তাই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বার বার নির্বাচিত করছে।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়েছেন বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, খাদ্য ঘাটতির দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে, প্রতিবন্ধীদের প্রতি মানবিক সহায়তার জন্য, গ্রামকে শহরে পরিণত করতে এ বিজয় পেয়েছেন শেখ হাসিনা। সাবেক কৃষিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ না করে মায়ের মমতায় আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব দরবারে নিজেকে মায়ের স্থানে বসিয়েছেন। এজন্য দেশের জনগণ এ বিজয় উপহার দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মাসেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তখন শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করার ঘোষণা, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, দেশকে ডিজিটাল দেশে রুপান্তরের ফলে এ বিজয় বলেও উল্লেখ করেন মতিয়া চৌধুরী।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিশাল বিজয়ের পর শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগের নেত্রী নন, তিনি বাংলার ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির মহান নেত্রী। যারা নির্বাচনে, লড়াইয়ের মাঠে হেরে গেছে তারা যতই চেষ্টা করুক না কেন, তারা আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, দেশের মানুষের ঠিকানা হলো শেখ হাসিনা। নির্বাচনে এ বিজয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে নিয়ে যাবার বিজয়। দেশ এগিয়ে নিতে চাইলে নৌকার বিকল্প নেই- দেশের মানুষ সেই কাজটি করেছে। এই সময় জঙ্গি, সন্ত্রাস মুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে দ-প্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।
নির্বাচন বিকৃত করার পরাজিত শক্তিদের হুঁশিয়ার করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার পাশে আছে। জনগণ শেখ হাসিনার সাথে ঐক্য হয়েছে, জনগণকে তার কাছ থেকে আর সরিয়ে নেওয়া যাবে না। স্বপ্নের দেশ গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় মানুষের পাশে থাকবেন। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা আচার্য্য