সুনির্দিষ্ট চুক্তি ও কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় সৌদি থেকে ফিরছেন গৃহকর্মীরা
তরিকুল ইসলাম : সচ্ছলতার আশায় সৌদি আরব গিয়ে রোববার রাতে সর্বশেষ ফেরত আসেন আরও ৮০ জন নির্যাতিত নারী। দেশটির নিয়োগকর্তার হাতে নির্যাতনের শিকার এসব নারীরা পালিয়ে রিয়াদ ইমিগ্রেশন ক্যাম্পে (সফর জেল) অবস্থান করেন। মূলত সেখান থেকেই দেশে ফিরেন তারা। ফেরার অপেক্ষায় আরো বহু নারী। ফিরে আসা গৃহকর্মীদের অভিযোগের বর্ণনায় খুব একটা ভিন্নতা নেই। প্রায় সকলেই শারীরিক, মানুষিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
অভিবাসন বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা ও যাওয়ার আগে সুনির্দিষ্ট কাজের চুক্তি এবং অভিজ্ঞতা না থাকায় ফিরে আসছেন গৃহকর্মীরা। সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠানোর পদ্ধতিতেই গলদ আছে। এমওইউ স্বাক্ষরের মাধ্যমে সেখানে নারী শ্রমিক পাঠানো হয়। ফলে কোনো সরকারেরই আইনগতভাবে দায় নাই। উভয় সরকারের মধ্যে চুক্তির অধীনে এই শ্রমিক পাঠানো হলে আইনি প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। তাই এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হওয়া উচিৎ।
ব্রাক মাইগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে গড়ে ২০০ নারী দেশে ফিরেছেন। মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলছেন, গত তিন বছরে কমপক্ষে পাঁচ হাজার নারী সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। সম্প্রতি যারা এসেছেন তাদের মধ্যে যৌন নির্যাতনের কারণে অন্তঃসত্ত্বা নারীও রয়েছেন। যৌন নির্যাতনের শিকার এসব নারীদের অনেক পরিবার তাদের গ্রহণ করতে রাজি নন। পরিস্থিতি আসলেই খুব খারাপ। বেশিরভাগ নারীই প্রবাসে ভালো নেই। ২০১৫ সাল থেকে ২ লাখেরও বেশি নারী শ্রমিক পাঠানো হয়। ফেরত এসেছেন ৫০ হাজারেরও বেশি নারী।
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র বলছে, কোনো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তারা মামলা না করে নিজের পাওনা নিয়ে দেশে ফিরতে চান। তখন লিখিত দিতে হয় যে নিয়োগ কর্তা তার সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ বা শর্ত ভঙ্গ করেনি, ফলে আইনগত প্রতিকার পাওয়া কঠিন হয়। কিন্তু কেউ শেষপর্যন্ত মামলা করতে চান না। জেদ্দায় দু’টি সেফ হোম রয়েছে। বিপদে থাকা নারীরা এসে সেখানে আশ্রয় নেন। এরপর তাদের সমস্যা সমাধানের করে দেশে পাঠানো হয়। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান