২০২১ সাল নাগাদ ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানীর লক্ষ্য পোশাক শিল্প মালিকদের, সরকারি প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি
স্বপ্না চক্রবর্তী : বাণিজ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০২১ সাল নাগাদ ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানীর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প উদ্যোক্তারা। কিন্তু এক্ষেত্রে মালিকদের পাশাপাশি সরকারী প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মনুশি বলেন, ২০২১সাল নাগাদ তৈরি পোশাক রপ্তানী আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয় বিজিএমইএ নেতৃত্ব চেষ্টা করলে ২০২৪ সাল নাগাদ দেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানীর পরিমাণ ১০০বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো সম্ভব। বাণিজ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করেন বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানও। তবে এর সরকারি প্রণোদনা আরও বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যদিও পোশাক শিল্প মালিকদের জন্য উৎস কর সুবিধা দিয়েছে সরকার। কিন্তু এর সুবিধা পোশাক শিল্প মালিকদের চাইতে অন্যান্য খাতের উদ্যোক্তারাই বেশি ভোগ করছে। এছাড়া রয়েছে ব্যাংক সুদের হারের জটিলতা। পোশাক শিল্প মালিকদের জন্য ৯শতাংশ সুদের হারের নির্দেশ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগীতায় টিকতে হলে আমাদের ব্যাংকিং সুবিধা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। পোশাক মালিকদের এই নেতা বলেন, এরপর রয়েছে আমাদের পোর্ট সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম পোর্টই নয় এয়ারপোর্ট সুবিধাও আমাদের জন্য অত্যন্ত সীমিত। যেসব সীমাবদ্ধতা অন্যান্য দেশের নেই। তাই আমাদের পোর্টের দক্ষতাও বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। আমাদের আরও একটি বিষয় খুব প্রয়োজন তা হলো মেশিনারি আপগ্রেডেশন ফান্ড। যা ভারত, ভিয়েতনাম সব দেশেরই রয়েছে। তবে সরকারের পাশাপাশি মালিকপক্ষকেও নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, মালিকদের নিজেদের পণ্যের মার্কেটিং দক্ষতা বাড়াতে হবে। কারণ পণ্যের রপ্তানী বাড়াতে মার্কেটিংয়ের বিকল্প নেই। বাড়াতে হবে তৈরি পোশাক সংক্রান্ত গবেষণাও। স্যাম্পল নিয়ে ব্রান্ডিং করতে। এইসবের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আমরা অবশ্যই ২০২৪ সালের মধ্যে ১০০বিলিয়ন ডলার রপ্তানী করতে পারবো। একই কথা বলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনও। তিনি বলেন, এই শিল্পের সাথে জড়িত মালিকরা প্রতিনিয়িত বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হচ্ছেন। তবুও কেউ পিছনে ফিরে তাকাচ্ছেন না। দিন দিন আমাদের উৎপাদন এবং রপ্তানী বেড়েই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে শুধু ১০০মিলিয়ন কেনো আমাদের রপ্তানী ১০০০মিলিয়নও ছাড়িয়ে যাবে একদিন। তবে এর জন্য এই শিল্পকে ধ্বংস করে দেওয়ার লক্ষ্যে যেসব বহিরাগত উস্কানিদাতারা প্রতিনিয়িত চেষ্টা করে যাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আমি সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। পোশাক শিল্পের উন্নয়নের দিকে ধাবিত হওয়ার পথে কেউ যেনো পথের কাটা হয়ে দাঁড়াতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চয়তা অত্যান্ত জরুরি।
এ ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শী বলেন, আমি নিজেও এই খাতের একজন মানুষ। আমার বিশ্বাস পোশাক শিল্প মালিকরা চাইলেই এর উৎপাদন-রপ্তানী সব বাড়ানো সম্ভব। তবে এ লক্ষ্য অর্জনে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশ্বাস দিচ্ছি। সম্পাদনা : খালিদ আহমেদ