আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ২
অর্থমন্ত্রী বললেন, ব্যাংকিংখাতের অনিয়ম দূর করতে প্রতিটি ব্যাংকে স্পেশাল অডিট করা হবে, অসাধু ব্যবসায়ীদের দুর্দিন চলে এসেছে
মাসুদ মিয়া : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম দ‚র করতে প্রতিটি ব্যাংকে স্পেশাল অডিট করা হবে। আমাদের জানতে হবে কেন ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম হচ্ছে। এই অনিয়মের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের বের করতে হবে। তবে, ব্যাংকারদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। প্রকৃত দোষীরাই শাস্তি পাবে।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) অডিটরিয়ামে রূপালী ব্যাংকের ব্যবসায়িক সম্মেলন ২০১৯-এ তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শিগগিরই তিনটি অডিট ফার্মকে দিয়ে এ কাজ করানো হবে। দেশে খেলাপি ঋণের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এটা একটা বড় ধরনের ক্রাইম। জনগণের কষ্টের টাকার সঠিক ব্যবহার করে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। এই টাকা আটকিয়ে যারা ঋণ খেলাপি বাড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এবার কঠিন ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে। খেলাপি ঋণ বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের কিছু অসাবধানতাই প্রধান কারণ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন খাতে এই টাকা ব্যাবহার করা হবে সে ব্যপারে খেয়াল রাখতে হবে। যে খাতে এই ঋণের টাকা ব্যাবহার করা হবে ১০ বছর পর যদি তার কোন অস্তিত্ব না থাকে তাহলে সে টাকা কখনো ফেরত আসবে না। তাই ঋণ দেওয়ার পর গ্রহীতার সাথে ব্যাংক কর্মকর্তাদের আরও বেশি যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে বলে পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
ঋণ খেলাপিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ফেরত না দেবার উদ্দেশ্য নিয়েই যে সকল অসাধু ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে টাকা তুলেন তারা সাবধান, সাবধান, সাবধান। তাদের জন্য এখন দুর্দিন চলে এসেছে। তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। সে টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেটাই করা হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকের যে সকল কর্মকর্তা এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে জড়িত থাকবেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যারা আসলেই ব্যবসা করার জন্য ঋণ নেয় তাদের কথা ভিন্ন। মাঝে মাঝে ব্যবসার সময় যখন খারাপ যায় তখন খেলাপিতে পরিণত হয়, কিন্তু পড়ে ব্যবসা ভালো হলে তারা টাকা ফেরত এদের প্রতি সহনশীল হতে হবে। এছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের জন্যে বিশেষ অডিট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।’ মুস্তফা কামাল আফসোস করে বলেন, আমরা ছোট দেশ বলে জি-২০ সম্মেলনে অংশগ্রহন করতে পারিনা। অথচ গত ১০ বছরে আমরা ৫৮ থেকে ৪১ তম অর্থনীতির দেশে পৌছাতে পেরেছি। এখন আমাদের লক্ষ হল, আগামী ২১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে আরও ২১ টি দেশকে পেছনে ফেলা। সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে। অবশ্যই ২০৪১ সালে আমরা এটা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, রুপালী ব্যাংকের অপারেটিং প্রফিট ডিসেম্বরে ৩০০ কোটি টাকা হয়েছে। আশা করছি সামনে আরও ভাল প্রফিট আসবে। সেক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া এবছর লোকসানি ব্যাংকের তালিকায় নাম না থাকায় রূপালী ব্যাংককে অভিনন্দন জানান ফজলে কবির।
অনুষ্ঠানে রূপালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা : ইকবাল খান এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ১