সম্ভাবনার নতুন দিক ‘ব্রেইন ডেথ’ থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন
কে এম নাহিদ : দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে (চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ক্লিনিক্যালি ডেথ বা ব্রেইন ডেথ) অনেক রোগি থাকেন। চিকিৎসকরা যাদের বাঁচার আশা ছেড়ে দেন। এমন ‘ক্লিনিক্যালি ডেথ’ মানুষ নিজেরা না বাঁচলেও মৃত্যুর পূর্বক্ষণে নিজেদের কিডনি, লিভারসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করে বাঁচিয়ে দিতে পারেন অন্যদের। উন্নত বিশ্বে ‘ব্রেইন ডেথ’ রোগীদের কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা হলেও দেশে প্রথমবারের মতো এ প্রক্রিয়াটি শুরু হতে যাচ্ছে। এর ফলে বিপুলসংখ্যক কিডনি রোগীর কিডনি চাহিদা পূরণ হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে কোরিয়া-কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট টিমের কো-অর্ডিনেটর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা.এএসএম তানিম আনোয়ার বলেন, উন্নত বিশ্বে ব্রেইন ডেথ বা ক্লিনিক্যালি ডেথ রোগির কিডনি ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে আগে এ আইন ছিলো না। বর্তমানে গেজেট আকারে সুনির্দিষ্ট আইন করা হয়েছে। এ আইনের ফলে এখন থেকে দেশেও ব্রেইন ডেথ রোগীদের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে। এতে করে কিডনি রোগিরা নতুন জীবন পাবেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) বারডেম, কিডনি ফাউন্ডেশন ও সিএমএইচ এ পাঁচ হাসপাতালের যেকোনো একটিতে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা হতে পারে। সময় অনলাইন
চিকিৎসকরা জানান, বাংলাদেশে প্রতি বছর পাঁচ হাজার মানুষের কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন। এর বিপরীতে মাত্র ১২০ জন মানুষ কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের সুযোগ পায়। কিডনি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে পাঁচ সদস্যের কিডনি বিশেষজ্ঞের একটি টিম বাংলাদেশে আসছে। দেশের কিডনি বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দেবে কোরিয়ার এই বিশেষজ্ঞ টিম। জানা গেছে, এ সময় ঢাকার চার-পাঁচটা আইসিইউ খুঁজে দেখা হবে। ‘ব্রেইন ডেথ’ রোগি পাওয়া গেলে এবং রোগির আত্মীয়স্বজনের সম্মতি পেলে অস্ত্রোপচার করা হবে। যদি ‘ব্রেইন ডেথ’ রোগি পাওয়া না যায়, তাহলে পরবর্তীতে আবার উদ্যোগ নেয়া হবে।
এ হাসপাতালগুলোর যেখানেই দাতা পাওয়া যাবে, সেখানে অস্ত্রোপচার করা হবে। কিডনি বিকল হয়ে গেলে ডায়ালিসিস অথবা প্রতিস্থাপন করতে হয়। জীবিত ও ব্রেইন ডেথ রোগিদের কিডনি প্রতিস্থাপন করে কিডনি রোগীদের সারিয়ে তোলা যায়। যতোদিন পর্যন্ত ব্রেইন ডেথ ব্যক্তির কিডনি ব্যবহার করা যাবে না, ততোদিন পর্যন্ত কিডনি প্রতিস্থাপন বাড়ানো যাবে না। সে কারণে মৃত ব্যক্তির কিডনি দানে রোগীর স্বজনদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।