সাগর-রুনি হত্যাকা-ের ৭ বছর, ৬২ বারেও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়নি
ইসমাঈল ইমু : চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার ৭ বছরেও রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতরা গেপ্তার হয়নি। ঘটনার পরে ওই সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেফতারের কথা জানালেও তা আজও হয়নি।
এদিকে এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ৬২ বারেও দাখিল করেনি র্যাব। গত বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেন। ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান জানান, আদালতে আজ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সহকারী পুলিশ সুপার ওয়ারেছ আলী মিয়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় বিচারক এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার কারণে শুরুতেই আদালতের নির্দেশে র্যাব এই মামলার তদন্ত করছে। কিন্তু এত দীর্ঘ সময়ে কোনো আসামিকেই চিহ্নিত বা আটক করতে পারেনি র্যাব। সাগর-রুনিকে কেন খুন করা হয়েছিল, তাদের ওপর হামলার মোটিভও তারা এখনো জানে না। র্যাবের তদন্ত, কবর থেকে দু’জনের লাশ তুলে ‘ভিসেরা’ (রাসায়নিক) পরীক্ষা এবং ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ‘ফরেনসিক’ পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণাগারে পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে যে আলামত পাঠানো হয়েছিল, তা থেকে কারো পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া যায়নি। ঢাকা থেকে ২১ জন সন্দেহভাজনের ডিএনএ নমুনা আলামতের নমুনার সঙ্গে মেলানোর জন্যও পাঠানো হয়। কিন্তু কারো নমুনাই আলামতের ডিএনএ’র সঙ্গে মেলেনি।
অপরদিকে সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। আজ সোমবার সকাল ১১টায় সেগুন বাগিচায় ডিআরইউ চত্বরে এই প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রাজাবাজারের ভাড়া বাসা থাকে নিহত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সাগর বেসরকারি চ্যানেল মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক ও রুনি এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছিলেন। এ ঘটনায় রুনির ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। মামলার পর রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আটজনকে আটক করা হয়। বাকিরা হলেন, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর, আবু সাঈদ ও বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির। এর মধ্যে পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান জামিনে রয়েছেন।