ইচ্ছাকৃত খেলাপিঋণ অবলোপন করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
আবু বকর : ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ অবলোপন করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ঋণ অবলোপন প্রক্রিয়া যাচাই-বাছাই কোনো ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ অবলোপনের প্রমাণ পেলে তা আদায় করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ৪৯ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। ঋণ অবলোপনের সময় ব্যাংকগুলোকে ঋণ অবলোপন নীতিমালা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া আছে। এসব ঋণ অবলোপনের সব প্রক্রিয়াগুলো মেনে করা হয়েছে, নাকি কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে দায়মুক্ত করার জন্য করা হয়েছে তা যাচাই-বাছাই করতে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ঋণ অবলোপনের নিয়ম-কানুন সঠিকভাবে মানা, কোনো খেলাপিকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে দায়মুক্ত করা হয়েছে কিনা নতুন করে পর্যালোচনা করবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গঠিত কমিটি। অবলোপনকৃত ঋণ যাচাই, খেলাপি ঋণ আদায়, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার বিষয়ে এ কমিটি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংক ৮ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, জনতা ৪ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা, রূপালীর ১ হাজার ১৯ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক ২ হাজার ১৫৪ কোটি, দ্য সিটি ব্যাংক ১ হাজার ৯০৩ কোটি, আইএফআইসির ১ হাজার ৮১৪ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ১ হাজার ৬১৯ কোটি, এবি ব্যাংক ১ হাজার ৫৩৩ কোটি, পূবালী ব্যাংক ১ হাজার ৫২৯ কোটি, উত্তরা ব্যাংক ১ হাজার ৩২৫ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংক ১ হাজার ১৪৯ কোটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ১ হাজার ১৪১ কোটি, ইসলামী ব্যাংক ৯০৪ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংক ৯৮৯ কোটি এবং ব্যাংক এশিয়ার ৮২৭ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার আওতায় আগে কোনো ঋণ পাঁচ বছর পর্যন্ত আদায় না হলে মামলা করে অবেলোপন করা যেত। গত সপ্তাহে আগের নীতিমালা সংশোধন করে কোনো মামলা ছাড়াই একাধারে তিনবছর অনাদায়ী ঋণ অবলোপন করার বিধি জারি করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, আদালতের মাধ্যমে দ্রুত অর্থ ঋণ মামলা নিষ্পত্তি করে খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। অবলোপনের সময় অনেক ইচ্ছাকৃত খেলাপিও পার পেতে পারেন। তাই মামলা ছাড়া ঋণ অবলোপন করা ঠিক হবে না। সম্পাদনা : ইকবাল খান