১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন, তফসিল ঘোষণা
রিয়াজ হোসেন, জোবয়ের সানি : বিভিন্ন সংগঠনের বিরোধিতার মধ্যে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিলে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) গঠনতন্ত্রের ৬(বি) ও ৭(এ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২৫টি পদে আগামী ১১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এই তফসিল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী চিফ রির্টানিং কর্মকর্তা জানান আগামী ১৯ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি নিজ নিজ হল অফিস থেকে মনোনয়নপত্র কেনা যাবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি জমা ও যাচাই বাছাইয়ের শেষ দিন। বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হবে। ২ মার্চ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষে দিন। প্রত্যাহার শেষে ৩ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৫ মার্চ। নির্বাচনি তফসিলে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) গঠনতন্ত্রের ৬(বি) ও ৭(এ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২৫টি পদে আগামী ১১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পদগুলোর মধ্যে আছেÑ সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহসাধারণ সম্পাদক, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, সংস্কৃতি সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, ছাত্রপরিবহন সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক ও সদস্য পদে ১৩ জন।
এদিকে ডাকসু নির্বাচনের তফসিলকে ছাত্রলীগ স্বাগত জানালেও ছাত্রদল ও বাম ছাত্র সংগঠনগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনকে বিশেষ সুবিধা দিতে হলে ভোট কেন্দ্র বহাল রাখা হয়েছে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, তফসিল ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। এর আগে অনেকবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও নির্বাচন হয়নি। আমরা সকল ছাত্র সংগঠনের দায়িত্বশীল আচরণ আশা করছি। ডাকসু নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েই ক্ষমতাসীন হতে চাই। আমাদের মূল লক্ষ্য ছাত্রদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া।
ডাকসুতে ছাত্রলীগের প্যানেল নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ সাংগঠনিক দিক থেকে ডাকসু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল ছাত্রসংগঠনের সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক আছে। টিএসসি কেন্দ্রীক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সাথেও আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমরা ডাকসুতে নারী নেতৃত্বের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাই। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি আদিবাসী ও সমতলের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমাদের প্যানেল দেয়ার চিন্তা আছে।
তফসিল ঘোষণার পর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদল সভাপতি মেহেদী তালুকদার বলেন, আমরা আগে থেকেই ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের দাবি তুলেছিলাম। তাছাড়া নির্বাচন পেছানোর দাবিতে ভিসি বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছি। কিন্তু বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবিকে আমলে না নিয়ে তফসিল ঘোষণা করেছে। ছাত্রলীগকে সুবিধা করে দেয়ার জন্য প্রহসনের নির্বাচনের অয়োজন করছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এই তফসিল প্রত্যাখ্যান করছি।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সভাপতি ফয়েজ উল্ল্যাহ বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসন সকল যৌক্তিক দাবিকে উপেক্ষা করে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ফলে একটি সুস্থ, অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা নিয়ে সন্ধেহ রয়েছে। ডাকসু নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম, জালিয়াতি করার চেষ্টা করলে ছাত্রসমাজ তা মেনে নেবে না।
কোটা আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক বলেন, বেশিরভাগ ছাত্র সংগঠনই হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র চেয়েছে। আমাদের কোনো দাবিই সেইঅর্থে গ্রহণ করা হয়নি তফসিলে। হলে ভোট কেন্দ্র হলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান