৫ মাসে আমদানি করতে হবে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি তেল
শাহীন চৌধুরী : দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জ্বালানি তেলের চাহিদা। ফলে এ খাতে সরকারকে যথেষ্ট ভতুর্কিও দিতে হচ্ছে। চলতি বছর জুনের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৫ মাসে দেশে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে ৮০৬ দশমিক ৭৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৬ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। নিজস্ব ব্যয়ে সরকার এ তেল আমদানি করবে। জি-টু-জি (সরকার থেকে সরকার) চুক্তির আওতায় ছয় মাসে বিভিন্ন দেশের আটটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানির কাছ থেকে ১ দশমিক ৪২ মিলিয়ন টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে বাংলাদেশ। খবর জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রের।
সূত্র জানায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ও রাষ্ট্রয়াত্ত্ব সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) যৌথভাবে এ তেল আমদানি করবে। আমদানি করা উল্লেখিত তেলের মধ্যে থাকবে ১ দশমিক ১৯ মিলিয়ন টন ডিজেল, এক লাখ টন জেট এ-১ ফুয়েল, ৩০ হাজার টন পেট্রল এবং এক লাখ টন ফার্নেস তেল। অতিসম্প্রতি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বিপুল পরিমাণ এ তেল আমদানির অনুমোদন দেয়। ওই সভায় তেল আমদানির প্রস্তাবিত ব্যয়েরও অনুমোদন দেয়া হয়।
সূত্রমতে, আমদানির জন্য প্রস্তাবিত ব্যয় অনুযায়ী প্রতি ব্যারেল ডিজেলে ২ দশমিক ৯৫ ডলার, প্রতি ব্যারেল জেট এ-১ ফুয়েল ৩ দশমিক ৯৬ ডলার, প্রতি ব্যারেল পেট্রলে ৫ দশমিক ৫০ ডলার এবং প্রতি টন ফার্নেস তেলের জন্য ২৯ দশমিক ৭৫ ডলার খরচ ধরা হয়েছে। প্রস্তাব অনুসারে আমদানিকৃত পরিশোধিত তেলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ‘বিএসপি জাপিন’ থেকে ৯০ হাজার টন ডিজেল, ৪০ হাজার টন ফার্নেস তেল ও ১৫ হাজার টন পেট্রল এবং মালয়েশিয়ার পিটিএলসিএল থেকে ১ দশমিক ১০ লাখ টন ডিজেল, ১০ হাজার টন জেট এ-১ ফুয়েল এবং ২০ হাজার টন ফার্নেস তেল আমদানি করা হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ইএনওসি থেকে ৯০ হাজার টন ডিজেল ও ২০ হাজার টন ফার্নেস তেল এবং থাইল্যান্ডের পিটিটিটি থেকে ৬০ হাজার টন ডিজেল ও ২০ হাজার টন ফার্নেস তেল ক্রয় করা হবে। আর চীনের দুটি রাষ্ট্রয়াত্ত্ব কোম্পানির থেকে শুধু ডিজেল কিনবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পেট্রোচীন থেকে ৯০ হাজার টন এবং ইউনিপেক থেকে ১ দশমিক ৫ লাখ টন ডিজেল ক্রয় করা হবে।
অপরদিকে কুয়েতের রাষ্ট্রয়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান কেপিসি থেকে ৫১ হাজার টন ডিজেল ও ৯০ হাজার টন জেট এ-১ ফুয়েল এবং ফিলিপাইনের পিআইটিসি থেকে ৯০ হাজার টন ডিজেল ও ১৫ হাজার টন পেট্রল ক্রয় করা হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে সরকার কয়েক বছর ধরে একটি সুনির্দিষ্ট কৌশল অনুসরণ করে আসছে। সেই কৌশল অনুসারে সরকার মোট জ্বালানি তেল আমদানির ৫০ শতাংশ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রয়ত্ত্ব কোম্পানির কাছ থেকে এবং বাকি ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয় করা হবে। তিনি মনে করেন, যদি সম্পূর্ণ আমদানি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে করা হয় সেক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ যেকোনো আন্তর্জাতিক সংকটের সময় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জ্বালানি দিতে না পারলে দেশের জ্বালানি আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে। সম্পাদনা : ইকবাল খান