বঙ্গোপসাগরের প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনায় হয়নি কোনো গবেষণা, নেই পুনরুদ্ধারের সক্ষমতাও
মতিনুজ্জামান মিটু : বিশ্বের অন্যান্য সাগর-মহাসাগরের মতো বঙ্গোপসাগরেও ভাসছে প্লাস্টিক। যাচ্ছে সী বেডের নিচে। ইতোমধ্যে ১৫ দিনের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বঙ্গোপসাগরের বীচে প্লাস্টিক বর্জ্যরে মধ্যে চীপস এর প্যাকেট সবচেয়ে বেশী।
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ওসান গভরনেন্স (আইসিওজি) এর পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ এন্ড এনভাইরনমেন্টাল সাইন্স ফ্যাকাল্টির ওসানোগ্রাফি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. কাওসার আহমেদ বললেন, বাংলাদেশে বছরে ৮ লাখ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে রিসাইকেল করা হয় ৩ লাখ মেট্রিক টন। বাকী ৫ লাখ টনের সিংহ ভাগই যায় সাগর ও নদীর পানিতে।
যদিও এনিয়ে দেশে এযাবত কোনো স্ট্যাডি বা গবেষণা হয়নি। তাই এর কোনো প্রকৃত তথ্য ও ধারণা নেই। বঙ্গোপসাগরের বুকে ও সৈকতে এ যাবত কি পরিমাণ বর্জ্য জমেছে এবং প্রতিনিয়ত কি পরিমাণ প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক বর্জ্য জমছে তা জানা নেই। কোন কোন সূত্র থেকে এসব বর্জ্য সাগর ও সৈকতে আসছে তা বলা যাচ্ছে না।
অন্যান্য জাহাজের কথা বাদ দিলেও বাংলাদেশে রয়েছে ২৪৮টি বাণিজ্যিক ট্রলার, ৬৭,৬৬টি নৌযান, ৩২,৮৫৯টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা, ৩৪,৪৫০টি নৌকা। এসব নৌযানের ৪ থেকে ৫ লাখ জেলে ও অন্যান্যরা বিড়ি সিগারেটের প্যাকেট, গুলের কৌটা, জালসহ নানা প্লাস্টিকের বর্জ্য প্রতিনিয়ত সাগরে পানিতে ফেলছে। এছাড়া বিভিন্ন নদ-নদী ও সী বিচ থেকে হু হু করে আসছে প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক বর্জ্য।
বিশ্বের সাগর-মহাসাগর এবং সৈকতে অনেক বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য জমলেও বঙ্গোপসাগরেও তা কম নয়। সমুদ্রের ভাসমান ও সমুদ্রের তলদেশে মাটির নীচে জমে থাকা প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক বর্জ্য পুনরুদ্ধার এবং রিসাইকেল করার জন্য কোটি কোটি টাকা দরকার। বিশাল এই ব্যয়ভার বহন করা বাংলাদেশের একার পক্ষে কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। সাগর মহাসাগরের প্লাস্টিক সমস্যা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বৈশ্বিকভাবেই এই সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে। পুনরুদ্ধার ও রিসাইক্লিং করা খুব একটা সহজ হবে না। তাছাড়া এটি কোনো অবস্থাতেই লাভজনক হবে না। সমুদ্রের প্লাস্টিক ব্যবস্থানায় প্রথমেই দরকার নিবিড় গবেষণা। এর ফলাফল পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে গ্রহন করতে হবে সাগরের প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার কার্যকর পদ্ধতি।
এ বিষয়ে ওয়েস্ট কনসার্ন এর নির্বাহী পরিচালক আবু হাসনাত মো. মাকসোদ সিনহা বলেন, সমুদ্রের প্লাস্টিক সংগ্রহ করে রিসাইক্লিং করার মতো সক্ষমতা বাংলাদেশের নেই। তবে বৈশ্বিক উদ্যোগ ও সহায়তায় এ সমস্যা মোকাবেলা করা অসম্ভব নয়। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব