মধ্যভাগে দাঁড়িয়ে এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা, পাঠক-প্রকাশক সবাই খুশি
কামরুল হাসান : অমর একুশে গ্রন্থমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। বাংলাদেশে হাজারো মেলার মাঝে বইমেলার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটছে মূলত এ মেলাকে কেন্দ্র করে। লেখক, পাঠক এবং প্রকাশকদের কাছে অমর একুশে বইমেলা এক সেরা উৎসব। ফাল্গুনের বিকেলে মিষ্টি রোদ গায়ে মেখেই বইপ্রেমী পাঠক-লেখকরা আসেন মেলা প্রাঙ্গণে। আর তাদের পদচারণাতেই মধ্যভাগে এসে যেনো চিরচেনা রূপ ফিরে পাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা।
শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় এদিন সকাল থেকেই মেলায় প্রবেশের সমস্ত পথে ছিল দীর্ঘ লাইন। সকালের শিশুপ্রহরে শিশুরা আর সকাল গড়িয়ে দুপুর পেরুলে সব বয়সী মানুষের লাইন আরো দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। তবে বইপ্রেমীদের অপেক্ষার মধ্যেও কোনো বিরক্তি ছিলো না, ছিলো না কোনো ক্লান্তি। নতুন বইয়ের গন্ধে সবাই ক্লান্তি দূর করতে থাকে নিমিষে।
শিশু প্রহরে বাবা-মায়ের হাত ধরে এসেছেন ৩ বছরের জারিফা বিনতে জসিম। গুটিগুটি পায়ে হাঁটছেন। এক হাত দিয়ে বাবার হাত ধরা আর এক হাত দিয়ে বইয়ের ব্যাগ। জারিফা আদুরে কণ্ঠে জানালো অনেক বই কিনেছি, আরো কিনবো।
টাঙ্গাইল থেকে মেলায় এসেছেন বইপ্রেমী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, আমি সরকারী চাকরির সুবাদে বিভিন্ন স্থানে বদলি হই তবে কোনো বছর মেলায় আসা বাদ যায় না। এবারো এসেছি, ঢাকার বন্ধুদেরও আসতে বলেছি, আশা করছি মেলাটি বেশ ভালোভাবেই উপোভোগ করবো। ঘুরে ঘুরে অনেকগুলো বই কিনবো বলে ভেবে রেখেছি, কিছু পছন্দের বইয়ের তালিকাও নিয়ে এসেছি। মেলায় বইপ্রেমী এতো মানুষ দেখে ভালো লাগে আমার।
এদিকে বেচাকেনা ভালো হওয়ায় খুশি প্রকাশকরাও। এ বিষয়ে কাকলী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারি এ কে নাসির আহমেদ জানান, ফাল্গুনের প্রথম দিন থেকেই মেলার রূপ বদলে গেছে। এখন পাঠক আসছেন, আর যারা আসছেন সবাই বই কিনছেন। অনেকেই নতুন বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। আমাদের বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।
গতকাল বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী : শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন বেগম আকতার কামাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোহাম্মদ সাদিক, জাহিদ হায়দার ও সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ আকরাম হোসেন।
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে সর্বোচ্চ ২৭২টি। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত মেলায় ২২৭১টি বই এনেছেন প্রকাশকরা। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান