দ্রুতগতিতে চলছে ১০ মেগা প্রকল্প ও একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণকাজ
শোভন দত্ত : চলমান মেগা প্রকল্প বর্তমানে দ্রুতগতিতে চলছে প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ দশ মেগা প্রকল্প ও একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজ। সব কিছু ঠিক থাকলে সরকারের এই মেয়াদেই দেশের মানুষ এসব প্রকল্পের সুফল পেতে শুরু করবে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখার ভিত্তি রচনার ক্ষেত্রে এই দশ মেগা প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, যে গতিতে এ সব প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে তাতে আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পগুলো শেষ হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পাদিত গত ১০ বছরের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সরকারের এই দশ মেগা প্রকল্প হচ্ছে- পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্প, ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লা ভিত্তিক রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্প এবং সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প।
অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পাদিত গত ১০ বছরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দশ মেগা প্রকল্পের বাইরেও ২০৩০ সালের মধ্যে মোট ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে। ২০১০ সালে ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন’ প্রণয়নের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের সূচনা হয়েছিল।
সরকারের প্রত্যাশা, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো (ইপিজেড) তৈরি হলে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রফতানি আয় সম্ভব হবে। একইসঙ্গে এই ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশের এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানীর ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ দূরত্ব ও সময় কমবে। দেশের (মোট দেশজ উৎপাদন) জিডিপি আনুমানিক এক শতাংশ বাড়বে।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পসরকার মনে করে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন (২য় পর্যায়) প্রকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় উৎস হিসেবে কাজ করবে। এ প্রকল্পে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে রাশিয়া।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প হতে আসবে বিপুল পরিমাণ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ। জাইকার আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ৯০ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় পায়রা বন্দর নির্মাণ (১ম পর্যায়) প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সমুদ্র বন্দরের সুবিধা বাড়ানোর মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। এ প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জীভূত ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। যা মোট ব্যয়ের ৩৩ দশমিক ৩২ শতাংশ।