শিশু-কিশোর সাধারণ জ্ঞান ও প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বইমেলার ১৬তম দিন
কামরুল হাসান : পৃৃথিবীর সকল জ্ঞান বইয়ের পাতায় ঘুমিয়ে থাকে। কোনো পাঠক যখন বইয়ের পাতা খুলে তখন ঘুমন্ত জ্ঞান জেগে ওঠে, কথা বলতে শুরু করে পাঠকের সাথে। জ্ঞানের আলো তখন পাঠককে আলোকিত করে, পাঠকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ব চরাচরে। তাইতো গতকাল শনিবার বইমেলায় দেখা গেলো জনতার ঢল।
শনিবার সকালে ছিলো শিশু প্রহর। সকাল ১১টায় গেট খোলার সাথে সাথে অভিভাবকদের সাথে আসা শিশুরা হুরমুর করে মেলা প্রাঙ্গনে ঢুকে পরে। মেলায় একটু পরেই আসে কবি আল মাহমুদের মরদেহ। কবিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শিশুরাও সেখানে ভির করে।
সকাল ১০টায় অমর একুশে গন্থ মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত নির্বাচন। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে ২১ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় মো. মুনতাজিম রহমান সায়মন (প্রথম স্থান), তাইয়্যেবা ও নুসাইবা নাজমী খান (দ্বিতীয় স্থান) ও মো. শাহারিয়ার আহম্মেদ (তৃতীয় স্থান) অধিকার করে। উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় নিসার বিন সাইফুল্লাহ জাহিন (প্রথম স্থান), কাশফিয়া কাওসার চৌধুরী (দ্বিতীয় স্থান) ও শাঁওলী সামরিজা (তৃতীয় স্থান) অধিকার করে। প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী অণিমা মুক্তি গমেজ, হাসান মাহমুদ এবং ক্রীড়াবিদ রঞ্জিত চন্দ্র দাস।
বিকাল গড়ালে মেলায় ভিড় জমায় বড়রা। শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলা কেন্দ্রে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মেলায় ঘুরতে আসা আনিতা আক্তার জানান, এবছর আজই প্রথম বইমেলায় আসলাম। আনিসুল হকের মা উপন্যাপসটি কিনবো পাশাপাশি আরো কয়েকটি বই কেনার ইচ্ছা আছে।
জসিম উদ্দিন নামে এক বইপ্রেমী জানান, আমি সিলেট থেকে এসেছি। আগে মেলায় সপ্তাহে দুই তিন দিন আসতাম। এখন চাকরির সুবাদে ঢাকার বাইরে থাকি বলে খুব একটা আসতে পারি না, তাই সুযোগ পেয়ে চলে আসলাম। এক বছরের বই এক মেলা থেকে কিনে নেবো।
আজ মেলায় মোট ২০৪টি নতুন বই এনেছেন প্রকাশকরা। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত মেলায় ২৪৭৫টি নতুন বই এসেছে মেলায়। লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন আসাদ মান্নান, শাকুর মজিদ, পাপীয়া জেরিন, আবদুল্লাহ আল ইমরান, মাহফুজ রিপন।
বিকেল ৪টায় প্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর : শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মইনুদ্দীন খালেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফরিদা জামান, নিসার হোসেন এবং মলয় বালা। সভাপতিত্ব করেন শিল্পী হাশেম খান।
সভাপতির বক্তব্যে হাশেম খান বলেন, সৈয়দ জাহাঙ্গীর বাংলাদেশের শিল্পকলা আন্দোলনে এক অবিস্মরণীয় নাম। শুধু চিত্রশিল্পে নয়, এদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনেরও তিনি এক অগ্রণীজন। তার মানুষ ও মৃত্তিকালগ্ন শিল্পকাজ এবং অঙ্গীকার জাতি চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। সম্পাদনা : আনিস রহমান