এবার সংশোধিত এডিপি ১৩ হাজার কোটি টাকা বেড়ে হচ্ছে ১ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা
সোহেল রহমান : প্রায় প্রতি বছরই সংশোধিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-এর আকার কাটছাঁট করা হলেও এবার বাড়ছে। কোথাও বরাদ্দ কমিয়ে, আবার কোথাও বা বরাদ্দ বাড়িয়ে সার্বিকভাবে এডিপি’র আকার দাঁড়াতে পারে প্রায় ১ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটে এডিপি’র আকার নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে সংশোধিত এডিপি’র আকার বাড়ছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশোধিত এডিপি (আর-এডিপি)-তে ব্যয় বাড়ছে মূলত: সরকারি খাতে, অন্যদিকে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে ব্যয় কমছে।
প্রসঙ্গত: গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এডিপি’র আকার ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা কমানো হয়েছিল। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত ও মূল বাজেটে এডিপি’র আকার ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ৮৮ হাজার ৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২২ হাজার ৬১০ কোটি টাকা অ-ব্যয়িত রয়ে গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক মাসে বেশ কিছু নতুন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এর মধ্যে নতুন অনেক মন্ত্রণালয় রয়েছে যাদের ইতোপূর্বে প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা কম, তারাও নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সংশোধিত এডিপি’র আকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়তে পারে। তবে এডিপি’র আকার যা-ই হোক না কেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রকল্প এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের অগ্রাধিকার প্রকল্পসমূহে বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না। পাশাপাশি যেসব মন্ত্রণালয়/বিভাগের এডিপি বাস্তবায়নের হার কম, তাদের উন্নয়ন বরাদ্দ সক্ষমতার ভিত্তিতে প্রদান করা উচিৎ বলে মনে করে অর্থ বিভাগ।
জানা যায়, বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে সরকারি খাতে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা অধিক বরাদ্দ চেয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। মূল বাজেটে এডিপি-তে সরকারি খাতে প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এটি এখন বেড়ে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা দাঁড়াতে পারে।
অন্যদিকে বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে প্রাক্কলিত বরাদ্দ থেকে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বিভিন্ন প্রল্পের বিপরীতে মোট বৈদেশিক ঋণ প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৬০ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১০ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নীট বৈদেশিক ঋণের প্রাক্কলন হচ্ছে ৫০ হাজার ১৬ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটা আরও কমে দাঁড়াবে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা।
জানা যায়, সংশোধিত এডিপি-তে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পদ্মা বহুমুখী সেতু, মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ ও রেল সংযোগ সংক্রান্ত প্রকল্পগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখানে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে পরিবহন খাতে। এছাড়া অগ্রাধিকার বিবেচনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ খাত এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে। সম্পাদনা : ইকবাল খান