বাংলাদেশ ব্যাংকের আভাস, খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাড়ছে অবলোপনকৃত ঋণও
আবু বকর : ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক আভাস দিয়েছে। সেই সাথে বাড়ছে অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণও। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমান ছিলো ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। আর অবলোপনকৃত ঋণের পরিমান ছিলো ৪৯ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই সময়ে খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৪৯ হাজার ১১৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম আমাদের অর্থনীতিকে জানান, দেশের সকল তফশিলী ব্যাংক ইতিমধ্যে নিজ নিজ ব্যাংকের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের খেলাপি ও অবলোপণকৃত ঋণের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে গত ৬ ফেব্রুযারি নতুন ঋণ অবলোপন নীতিমালা ঘোষিত হওয়ায় খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋনের শ্রেনী বিন্যাস করতে একটু সময় লাগছে। তিনি জানান, চূড়ান্ত তালিকা গভর্নরের অনুমোদন পেলে চলতি সপ্তাহে তা প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের খেলাপি ঋণের তালিকা প্রণয়নে তারা হিমশিম খাচ্ছে। কারণ ৬ ফেব্রুয়ারির ঘোষিত ঋণ অবলোপন (রাইট অফ) নীতিমালায় শিথিলতার মাধ্যমে অধিকাংশ খেলাপি ঋণ অবলোপনের তালিকায় স্থান্তরিত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ঋণ অবলোপনের নীতিমালায় যে সংশোধন আনা হয়েছে, তাতে ব্যাংকগুলোর তিন বছরের মন্দ মানের খেলাপি ঋণ ব্যালেন্স শিট থেকে বাদ দিতে হচ্ছে। এতে খেলাপি ঋণ আদায় না হলেও তা কাগজ-কলমে কমবে। এই সূত্র আভাস দিয়েছে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করবে। সেই সাথে বাড়বে অবলোপনকৃত ঋণের পরিমানও। এতদিন কোনো ঋণ মন্দ মানে শ্রেণিকৃত হওয়ার পাঁচ বছর পার না হলে তা অবলোপন করা যেত না।
অন্যদিকে নতুন নীতিমালায় অবলোপনের জন্য এখন আর আগের মতো শতভাগ প্রভিশন লাগবে না। আবার দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপনে মামলা করতে হবে না। এতদিন মামলা না করে ৫০ হাজার টাকা অবলোপন করা যেত। বছরের পর বছর ধরে ব্যাংক ব্যবস্থায় মন্দ মানে শ্রেণিকৃত খেলাপি ঋণ স্থিতিপত্র (ব্যালেন্স শিট) থেকে বাদ দেওয়াকে ঋণ অবলোপন-রাইট অফ বলে। যদিও এধরনের ঋণ গ্রহীতা পুরো টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে ২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকগুলো ঋণ অবলোপন করে আসছে। সম্পাদনা : ইকবাল খান