আগুন ঝুঁকিতে রাজধানীর ২৪৮টি হাসপাতাল ফায়ার সার্ভিসের সতর্কতা কেউ আমলে নেয়নি
সুমন পাইক : ফায়ার সার্ভিসের এক জরিপে দেখা যায় রাজধানীর শতকরা অর্ধেকের বেশি হাসপাতাল আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালও রয়েছে এই তালিকায়। এসব হাসপাতালে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। পুরনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে হাসপাতাল গুলি। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করার পরেও গুরুত্ব দিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ৪৩৩টি হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে এক জরিপে দেখা যায় এর মধ্যে ২৪৮টি ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলির মধ্যে আবার ১৭৪টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলিকে বারবার সতর্ক করা হলেও তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সম্প্রতি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে হাসপাতালটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। দুর্ভোগে পরে রোগীসহ স্বজনরা। ব্যাহত হয় চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালটিকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে কমপক্ষে ৩ বার সতর্ক করা হলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এই বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান বলেন, বেশিরভাগ হাসপাতালের বৈদ্যুতিক লাইন অনেক পুরনো। ফায়ার এক্সিটগুলোও নিরাপদ না। বারবার হাসপাতাল গুলিকে সতর্ক করলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখা গেছে বৈদ্যুতিক তারগুলি ঝুঁকিপূর্ণ। এই বিষয়ে হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আফজালুর রহমান জানান, হাসপাতালের বৈদ্যুতিক লাইনগুলি ঠিক আছে কিনা এবং অগ্নিকা- প্রতিরোধে কি পরিমাণ যন্ত্রপাতি- লোকবল দরকার তা জানার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছি। চিঠির উত্তর পেলে আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মহাখালীর ক্যান্সার গবেষণা ইনিস্টিটিউটের বেশিরভাগ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি মলিন। দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজোঁ অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও এর ব্যবহার না করাটা অযৌক্তিক। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের অধ্যক্ষ খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখানকার অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রায়ই তদারকি করা হয়। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। যে কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা রয়েছে এই হাসপাতালে। সম্পাদনা : ওমর ফারুক