চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত হলেও বাবা-মায়েরা এখনও টিকার নিয়ে আতংকিত
আসিফুজ্জামান পৃথিল : ফেসবুকের জন্মের এক শতাব্দিরও বেশি সময় আগে, টিকা-বিরোধী কর্মীরা এক অভিনব কায়দায় প্রতিবাদে নেমেছিলেন। ১৯৮৫ সালে যুক্তরাজ্যের লিচেস্টার শহরে মার্চের এক বিকেলে ১ লাখেরও বেশি বাবা-মা টিকা-বিরোধী এক পদযাত্রায় সামিল হয়েছিলেন। এরপর বহু বছর কেটে গেছে। মানুষ আরও আধুনিক আর শিক্ষিত হয়েছে। চিকিৎসাব্যবস্থায় আধুনিকতার শীর্ষে উঠেছে। কিন্তু বাবা-মায়েরা এখনও টিকার প্রতি আতংকিত! এখনও রাস্তায় না নামলেও তারা প্রতিবাদের জন্য বেঁছে নিচ্ছেন ফেসবুককে। সিএনএন
আজকের এই আধুনিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের এক বিশাল পরিমাণ মানুষ টিকায় বিশ^াস করেন না। তারা টিকাদানের বিরুদ্ধে রীতিমত প্রতিবাদ করছেন। উনবিংশ শতাব্দির ব্রিটিশ বাবা-মায়েরা ‘গ্রুসাম প্রক্রিয়ায়’ শিশুদের গুটি বসন্তের টিকা দেয়ার বিরোধী ছিলেন। এতে হাতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত তৈরী হতো। এর দাগও সারাজীবন বহন করতে হতো। যদিও আজকের জীবানুমুক্ত টিকা পদ্ধতি এতোটা বিভৎস আর ভীতিপ্রদ নয়। আজকের টিকা বিরোধীতার কারণ- স্বাস্থ্য নিয়ে অনাবশ্যক দুশ্চিন্তা, ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিশ^াস, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার প্রতি বিশ^াস এবং বড় ধরণের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো। তাদের দাবি, অত্যাবশ্যকীয় টিকাদান তাদের স্বাধীনতা খর্ব করছে! বর্তমানে চলছে সরকারের প্রতি অবিশ^াসের যুগ। সিএনএনকে এ কথা বলেছেন লন্ডন স্কুল অব হাজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের প্রফসর হেইডি লারসন। লারসন মনে করেন, গোঁড়ামি এবং টিকাবিরোধী আন্দোলন পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। এস্টাব্লিশমেন্টের প্রতি অবিশ^াস থেকে এ ধরণের আন্দোলনের জন্ম বলেও মনে করেন তিনি।
বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৯ সালে বিশ^ স্বাস্থ্যের জন্য বৃহত্তম ঝুঁকি হলো টিকার প্রতি অবিশ^াস। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘রোগকে এড়ানোর জন্য টিকাদান সবচেয়ে ব্যয় সাশ্রয়ী উপায়। এর ফলে বছরে ২০ থেকে ৩০ লাখ মৃত্যু প্রতিরোধ হচ্ছে। যদি সারা বিশে^র সবাইকে টিকার আওতায় আনা যায় আরো ১৫ লাখ মৃত্যু ঠেকানো যাবে।’ কিন্তু অতিদ্রুত হারে টিকার প্রতি মানুষের অবিশ^াস বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয় দেশগুলোতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে টিকাবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব