হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতীয় গুপ্তচর কূলভূষণ যাদবের মৃত্যুদ- বাতিলে শুনানি শুরু
নূর মাজিদ : নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) গতকাল সোমবার পাকিস্তানে আটক ভারতীয় গুপ্তচর কূলভূষণ যাদবের মৃত্যুদ- বাতিলের শুনানি শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক আদালত গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে ভারতীয় নাগরিক যাদবের মৃত্যুদ-ের রায় দেয়ার পরেই হেগ আদালতে এই রায় বাতিলের আবেদন করে ভারত। ভারতের অভিযোগ ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যাদবকে ইরান থেকে অপহরণ করে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। তবে পাকিস্তানের দাবী বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দেয়ার মিশন নিয়ে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করেন যাদব। এরপরেই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। ইকোনমিক টাইমস, ইয়ন, রিপাবলিক টাইমস
গতকাল ছিলো মামলার বাদিপক্ষে ভারতের শুনানির দিন। এদিন ভারতের হেভিওয়েট আইনজীবী ও দিল্লি হাইকোর্টের সিনিয়র কনসাল হরিশ সালভে আদালতের কাছে ভারতের বক্তব্য তুলে ধরেন। তার বিপক্ষে বিবাদি পক্ষে রয়েছেন পাকিস্তানের আরেক হেভিওয়েট ও ব্রিটিশ রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের আইনি পরামর্শক খাওয়ার কুরেশী। আজ মঙ্গলবার বিবাদি পক্ষের শুনানিতে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরবেন খাওয়ার কুরেশি। চারদিন ধরে আইসিজেতে এই মামলার শুনানি চলবে। আইসিজের দশ সদস্য বিশিষ্ট বিচারকের একটি বিশেষ বেঞ্চ এই শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী হরিশ সালভে গতকাল আইসিজেতে বলেন, পাকিস্তান কূলভূষণ যাদবের মামলাকে একটি মিথ্যে প্রচারণার মাধ্যমে বিকৃত করেছে। যাদব ব্যবসায়িক কাজে ইরানে ছিলেন। সেখান থেকেই তাকে অপহরণ করেছে আইএসআই, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সু¯পষ্টভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এর দ্বারা ভিয়েনা কনভেনশনও লঙ্ঘিত হয়েছে। এই ধরনের গর্হিত অপরাধের জন্য তিনি আদালতের কাছে পাকিস্তানকে অপরাধী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার আহবান জানান। হরিশ সালভের যুক্তি, একজন ভারতীয় নাগরিককে অপহরণ এবং সামরিক আদালতে বিচারের মাধ্যমে পাকিস্তান তার নৈতিক দৈন্যের পরিচয় দিয়েছে। এসময় তিনি আরো বলেন, সামরিক আদালতে বিচারের সময় যাদবকে বিন্দুমাত্র আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়নি পাকিস্তান। এর মাধ্যমে এই বিচার প্রক্রিয়ার আইনি যৌক্তিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ইতোপূর্বে, ভারতের আপিলের প্রেক্ষিতে কূলভূষণ যাদবের মৃত্যুদ- স্থগিত রাখার আদেশ দেয় আইসিজে। তার প্রেক্ষিতেই যাদবের মৃত্যুদ- স্থগিত করে পাকিস্তান। তবে হেগ আদালতের বিচারকার্য শুরু হওয়ার পূর্বে দেয়া বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তান আইসিজের রায় মেনে নিতে প্রস্তুত রয়েছে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মাঝে বিবাদ মীমাংসায় আইসিজি প্রতিষ্ঠা করা হয়।