কিশোরগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে অনুমোদন দিলো বেজা প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে ৫ হাজার এবং পরোক্ষ ২০ হাজার
স্বপ্না চক্রবর্তী : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নিয়মকানুন ও শর্ত পূরণে সক্ষম হওয়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেলো কিশোরগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এই অঞ্চলটি সম্পূর্ণরূপে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করলে ৬ বছরের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার লোকের প্রত্যক্ষ এবং ২০হাজার লোকের পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছে বেজা কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় এই অঞ্চলেই তৈরি হবে ভারতের বিশ্বখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটা মটরস লিমিটেডের মোটরযান।
গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ লাইসেন্স প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত সচিব) মো. ফারুক হোসেন, নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ইন্দো-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমাদ, নিটল-নিলয় গ্রুপের ভাইস-চেয়ারপার্সন সেলিমা আহমাদ এমপি, কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুসাব্বির আহমাদ এবং টাটা মটরস লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার জিতেন্দ্র বাহাদুর। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেজার নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আইয়ুব, কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন এর উদ্দ্যোক্তারাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় আব্দুল মাতলুব আহমাদ জানান, বাংলাদেশের নিটল-নিলয় গ্রুপের সাথে যৌথ উদ্যোগে টাটা ব্র্যান্ডের মোটরযান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে যার আমদানিকৃত মূলধনী যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে জোনে এসে পৌঁছছে এবং কারখানার অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুত শুরু হতে যাচ্ছে।
বেজার নির্বাহী পরিচালক পবন চৌধুরী জানান, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় এবং ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রাইভেট অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে বেজা ইতোমধ্যে ১৯ টি প্রতিষ্ঠানকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করেছে এবং ০৮ টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চুড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন লিমিটেডকে চুড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোনটি বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নিটল-নিলয় গ্রুপের একটি উদ্যোগ যা কিশোরগঞ্জ জেলার, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের দুই পাশে ৯১.৬৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। জোনটি দেশের সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়ন তথা শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশী-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও জিডিপি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে বেজা মনে করে।
প্রসঙ্গত, ইতোমধ্যে কিশোরগঞ্জ ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষ ও এই যৌথমূলধনী কোম্পানির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভারতের আরও একটি বিশ্বখ্যাত স্টিল প্রস্তুকারী কোম্পানি এখানে বিনিয়োগের লক্ষ্যে প্রকল্পে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও এই জোনে দেশি-বিদেশি এগ্রোবেইজড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল, তথ্য প্রযুক্তি ও টেলি-যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। সম্পাদনা : আনিস রহমান