২ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি ও ৮টি সমঝোতা স্মারক সাক্ষর
নূর মাজিদ : অধিকৃত কাশ্মীরের পুলাওয়ামায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার ভেতর দিয়ে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তার মাঝেই পাকিস্তান সফর করছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রোববার সন্ধ্যায় দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ইসলামাবাদ পৌঁছুলে তাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দেয়া হয়। বিমানবন্দর থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে সৌদি যুবরাজকে নিজ বাসভবনে নিয়ে আসেন ইমরান খান। আল জাজিরা, ডন, ইয়ন।
রোববার রাতেই প্রিন্স বিন সালমানের রাজকীয় ডেলিগেশন পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের প্রেক্ষিতে ২ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগের ৮টি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। পাকিস্তানের পেট্রো-কেমিক্যাল, খনিজ স¤পদ, ক্রীড়া এবং আরো বেশ কয়েকটি খাতে এই বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে গোয়াদার বন্দরে ৮শ কোটি ডলার ব্যয়ে একটি তেল পরিশোধানাগার গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বাড়িতেই এই সকল সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তান এবং সৌদি আরব সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ। এই সময় ইমরান খান ও বিন সালমান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ নিয়ে সৌদি যুবরাজ বলেন, আজ আমরা সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছি। যার পরিমাণ ২ হাজার কোটি ডলার। প্রথমধাপে এই পরিমাণ বিনিয়োগ করা হবে। এরপর প্রতিমাসেই এই বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। আমি আশা করি এই বিনিয়োগ উভয় দেশের জন্যেই লাভজনক হবে।
যুবরাজের সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তান ও সৌদি আরব এখন তাদের স¤পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের মাঝে এতো শক্তিশালী স¤পর্ক আগে কখনোই ছিলোনা। জবাবে যুবরাজ বিন সালমান বলেন, পাকিস্তান ভবিষ্যতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে পরিণত হতে চলেছে। আমরা এর অংশ হতে চাই। এই সময় তাদের মাঝে সৌদি আরবে পাকিস্তানের শ্রম শক্তির মূল্যায়ন ও দেশটির কারাগারে বন্দী ৩ হাজার প্রবাসি পাকিস্তানী নাগরিককে মুক্তি দেয়ার বিষয়টিও আলোচনা হয়। ইমরান খান বলেন, এই সকল লোক নিজের পরিবার-পরিজন ছেড়ে সৌদি আরবে কারান্তরীন রয়েছেন। আমি আপনার কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, আপনি তাদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। দুই নেতার বৈঠকে পাকিস্তানের সঙ্গে দেশটির কৌশলগত স¤পর্কের নির্ভরশীলতার বিষয়টি উঠে আসে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা সৌদি রাজপরিবারের এলিট রয়্যাল গার্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। সৌদি সরকার ও রাজ পরিবারের সুরক্ষায় তারা বলিষ্ঠ অবদান রাখছে। তাই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট সৌদি আরবের শাসকগোষ্ঠীর জন্য পাকিস্তানি সেনা সহায়তা বৃদ্ধির জন্য চাপ সৃষ্টিতে সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ৮শ কোটি ডলার। যা দিয়ে দুই মাসেরও আমদানি ব্যয় মেটাতে অক্ষম পাকিস্তান। এমন সময়ে সৌদি আরবের দেয়া এই বিপুল বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি দেশটির অর্থনৈতিক খাতকে চাঙ্গা করতে সহায়তা করবে এমন আশা করা হচ্ছে। সম্পাদনা : ইকবাল খান