স্প্রেডের হার নির্ধারিত সীমার বেশি ৩৪টি ব্যাংকের
রমজান আলী : ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের মধ্যকার সুদহারের ব্যবধানের (স্প্রেড) বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না দেশি-বিদেশি ৩৪টি ব্যাংক। এদের সবগুলোর স্প্রেডের হার নির্ধারিত সীমার বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪ শতাংশের নিচে রাখতে হবে সকল ব্যাংকের স্প্রেড হার (ঋণ-আমানত অনুপাতের পার্থক্য)। তা সত্ত্বেও ঋণের বিপরীতে বেশি সুদ গ্রহণ করে আমানতের বিপরীতে যে সুদ দেওয়ার কথা সেই নিতীমালা মানছে না ৩৪টি ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর স্প্রেড হার নভেম্বরের তুলনায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশে। আগের মাসে যা ছিল ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। একই সময়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর স্প্রেড হার ২ দশমিক ৩১ থেকে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশে পৌঁছেছে। অন্যদিকে বিদেশি ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাতের পার্থক্য বরাবরের মতই রয়েছে নির্ধারিত সীমার বাইরে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংগুলোর স্প্রেড হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছেছে।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর স্প্রেড হার ছিল ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। সুতরাং বাৎসরিক হিসাব অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে তাদের স্প্রেড হার বেড়েছে শূন্য দশমিক ০৭ শতাংশ।
উল্লেখ, বিভিন্ন প্রকার ঋণের সুদহার ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গত বছরের ৩০ মে আমানত-ঋণের সুদহার ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যাচ্ছে না এই স্প্রেড । সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিষয়টি নির্ভর করে ব্যাংকের অর্থের চাহিদা ও সরবরাহের উপর। বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করে কম সুদে ঋণ বিতরণ করা কোনো ব্যাংকের পক্ষেই সম্ভব নয়। এছাড়াও কস্ট অব ফান্ড, সিআরআর ও এসএলআর, পরিচালনা ও প্রশাসনিক খরচ এবং খেলাপি ঋণের সাথে স্প্রেডের বিষয়টা সম্পৃক্ত। এসব কারণেই এখনও পর্যন্ত অনেক ব্যাংক এই পার্থক্য কমিয়ে আনতে পারছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বর্তমানে ৬টি বিদেশি ব্যাংক ও ২৮টি বেসরকারি ব্যাংকের স্প্রেড হার ৪ শতাংশের অধিক। ব্যাংকগুলো হচ্ছে- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, উরি ব্যাংক, হংকং সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন (এইচএসবিসি), ব্যাংক আলফালাহ্ লিমিটেড, এবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয?াল ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ট্রাস্ট ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড। সম্পাদনা : ইকবাল খান