গ্রাম পুলিশকে ৪র্থ শ্রেণির বেতন স্কেল দিতে অর্থবিভাগের ‘না’, সংসদে প্রশ্নোত্তরে এলজিআরডি মন্ত্রী
আসাদুজ্জমান স¤্রাট : গ্রাম পুলিশকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ন্যায় সমস্কেল প্রদানের অবকাশ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে অর্থবিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা-৭ আসনের সরকার দলীয় এমপি হাজী মো. সেলিমের এক প্রশ্নের জবাবে একথা জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। মন্ত্রী জানান, তাদেরকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সমস্কেল প্রদানের ব্যাপারে ২০১২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে অর্থবিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে অর্থবিভাগ সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৭১টি। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ১০ জন গ্রামপুলিশ (১ জন দফাদার ও ৯ জন মহল্লাদার) রয়েছেন। সে অনুযায়ী সারাদেশে বর্তমানে গ্রামপুলিশের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৭১০ জন। তিনি আরও জানান, অর্থবিভাগের জবাবের পর প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে গত বছরের ৪ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত দফাদারদের বেতন ৩৪০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৭ হাজার টাকায় এবং মহল্লাদারদের বেদন ৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার ৫শ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
সরকার দলীয় সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, অতিরিক্ত ভারবহনকারী যানবাহনের কারণে সারাদেশে রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রহস্ত হচ্ছে। এটা নিয়ন্ত্রণে আন্তঃমন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি প্রক্রিয়া বের করা দরকার। মন্ত্রী বলেন, দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সারাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে প্রচুর পাকা স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। সেগুলোর নির্মাণসামগ্রী বহনকারী যানবাহন অতিরিক্ত ভার বহন করছে। এই কারণেই গ্রামীণ রাস্তাঘাট বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তা কেটে ট্রাক্টর ওঠানামার ব্যবস্থা করার কারণেও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গ্রামীণ মানুষের এই চাহিদা যেমন বন্ধ রাখা যাবে না, একইভাবে রাস্তাঘাটও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়- সেভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের আনোয়ারুল আজীম (আনার) এর এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম সংসদকে জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ৮৭ শতাংশ জনগণ নিরাপদ পানি সুবিধার আওতাভুক্ত। সেই হিসাবে দেশে মোট ১৩ কোটি ৯২ লাখ মানুষ নিরাপদ পানির সুবিধা ভোগ করছে। এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশে ৯৯ শতাংশ মানুষ মৌলিক স্যানিটেশনের অন্তর্ভূক্ত। এরমধ্যে ৬১ ভাগ জনগণ উন্নত ল্যাট্রিনের আওতাভুক্ত রয়েছে। অবশিষ্ট ২৮ শতাংশ যৌথ ল্যাট্রিন এবং ১০ শতাংশ অনুন্নত ল্যাট্রিন ব্যবহার করেন। এই হিসাবে ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ, জয়েন্ট মনিটরিং প্রোগ্রাম (জেএমপি), ২০১৫ অনুযায়ী বর্তমানে উন্নত স্যানিটেশন ব্যবহারকারী সুবিধাভোগ্যীর সংখ্যা ৯ কোটি ৭৬ লাখ।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম, আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে এলজিআরডি মন্ত্রী সংসদকে জানান, সারা দেশব্যাপী বিটুমিনের পরিবর্তে কনক্রিটের সড়ক নির্মাণের বিষয়টি এখনও পরীক্ষাধীন। বিটুমিনের পরিবর্তে কনক্রিটের সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সড়কে কনক্রিট ঢালাইয়ের পরে কিউরিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময়ের প্রয়োজন এবং ওই সময়ে রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। প্রতি কিলোমিটার কনক্রিটের রাস্তা নির্মাণ খরচ বিটুমিনাস রাস্তা নির্মাণ খরচের অপেক্ষায় ২.২ থেকে ২.৫ গুণ বেশি। কনক্রিটের রাস্তা নির্মাণে পাথর ব্যবহার করতে হয় যা আমদানি নির্ভর। কনক্রিটের রাস্তা নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত নির্মাণ যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে।