অর্থঋণ আদালতের ৫৭ হাজার মামলায় আটকে আছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭২৬ কোটি টাকার খেলাপিঋণ
আবু বকর : অর্থঋণ আদালতে ব্যাংকগুলোর চলমান ৫৭ হাজার ২৯৬টি মামলায় ১ লাখ ১০ হাজার ৭২৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আটকা পড়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এই মামলাগুলো চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, এই মামলাগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকনাধীন ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মামলার সংখ্যা ১৯ হাজার ৬৩টি। এতে পাওনা অর্থের পরিমাণ ৪৯ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে ৭ হাজার ৩১৪টি। এর বিপরীতে টাকা আটকে আছে ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মামলা রয়েছে ২৮ হাজার ৫৮২টি। এসব মামলায় ৫২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থঋণ আদালতে ২ হাজার ৩৩৭টি মামলা রয়েছে। এর বিপরীতে পাওনা রয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। মামলাগুলো নিষ্পত্তি না হওয়ায় এ বিপুল পরিমাণ অর্থ আটকে আছে।
অন্যদিকে ব্যাংকের ঋণ বিষয়ে হাইকোর্টে ৫ হাজার ৩৭৬টি রিট মামলা রয়েছে। এর বিপরীতে ৫২ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা আটকে রয়েছে। এসব রিটের মাধ্যমে আবেদনকারীরা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পেয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজূল ইসলাম জানিয়েছেন, খেলাপি ঋণের সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। আর চলমান মামলাগুলো খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কার কী করণীয় তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলাদা দুটি কমিটি কাজ করছে। এর বাইরে আইন কমিশন, আইন মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যুক্ত করা হচ্ছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি আইন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যংক। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ব্যাংক মালিকরা বৈঠক করেন এমডিদের সঙ্গে। এ সময় মালিকদের পক্ষ থেকেও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয় এমডিদের। সম্পাদনা : ইকবাল খান