মাধ্যমিক বিদ্যালয়েই সোস্যাল মিডিয়ায় আসক্ত ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী
বাশার আল আসাদ : স্কুল চলাকালেই সোস্যাল মিডিয়ায় আসক্ত ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী আবার এটি ব্যবহার করছে পাঠদান চলাকালেই। যদিও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তবে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হচ্ছেন শিক্ষকরা। ‘সোস্যাল মিডিয়া পার্টিসিপেশন অব দ্য সেকেন্ডারি স্কুলস ইন ঢাকা সিটি’ শীর্ষক নায়েমের জরিওপর প্রতিবেদন। সূত্র : বণিক বার্তা
জরিপে অংশ নেয়া ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই বলেছে, সোস্যাল মিডিয়ার ব্যবহার তাদের পড়ালেখার ওপর নেতিবাচক প্রভাবে ফেলছে। তাদের ভাষ্য, যে সময়টুকু এখন তারা ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সাইটে ব্যয় করছে, আগে এ সময়ে তারা পড়ালেখা করত। এমনকি সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার তাদের বাড়ির কাজেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছে ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী দৈনিক ৩ ঘণ্টার বেশি সময় সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করে। এছাড়া দৈনিক ১-২ ঘণ্টা ব্যবহার করে ২১ শতাংশ ও ন্যুনতম ১ ঘণ্টা সময় সোস্যাল মিডিয়ায় কাটায় মাধ্যমিক পর্যায়ের ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও দায় আছে বলে মনে করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। তিনি বলেন, শ্রেণীকক্ষের পাঠদান, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা, গ্রুপ স্টাডির মধ্য দিয়েই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সময় কাটত আগে। শিক্ষার্থীরা এখন সোস্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে অভিভাবকরা দায় এড়াতে পারে না। কারণ শিক্ষার্থীরা যে ডিভাইসটির মাধ্যমে এ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে, সেটি সরবরাহ করা হচ্ছে পরিবার থেকেই। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা কোন ধরনের সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে, সে তথ্যও উঠে এসেছে নায়েমের জরিপে। শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছে ফেসবুক। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেও একই তথ্য পাওয়া গেছে।
গত বছর একদল মার্কিন শিশুকল্যাণ বিশেষজ্ঞ ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কাছে একটি চিঠি লেখেন। এতে তারা ‘মেসেঞ্জার কিডস’ নামে শিশুদের মেসেজিং অ্যাপটি বন্ধ করে দেয়ার আহŸান জানান। শিখন-শেখানো কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ২০১৭ সালে শ্রেণীকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ। যদিও স্কুলপর্যায়ে এর বাস্তবায়ন হচ্ছে খুবই কম। শিক্ষার্থীদের সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার বিষয়ে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে নায়েমের ওই প্রতিবেদনে। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়গুলোর গ্রন্থাগারগুলোয় জনপ্রিয় বই, জার্নাল ও ভ্রমণকাহিনী সংগ্রহ রাখা, যাতে শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারমুখী হয়; সরকারকে সোস্যাল মিডিয়ায় অংশগ্রহণের বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেয়া এবং অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তোলা।