মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে গুরুত্বদেয়ার আহব্বান জানালো জাতিসংঘ
নূর মাজিদ : জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের-ওএইচসিএইচআর বার্ষিক বৈঠকে মিয়ানমারের প্রতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ ও দ্রুত পুনর্বাসন নিশ্চিত করার আহব্বান জানানো হয়েছে। সংস্থাটির হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচলেট এই আহব্বান জানান। বৃহ¯পতিবার জেনেভায় অনুষ্ঠিত ওএইচসিএইচআর-এর বার্ষিক অধিবেশনে একথা বলা হয়।এরপর গতকাল শুক্রবার সংস্থাটি বাংলাদেশের প্রতি নতুন করে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া বন্ধ না করারও আহব্বান জানায়। মিয়ানমার টাইমস, বিডিনিউজ২৪।
ব্যাচলেট এই বৈঠকে মিয়ানমারের প্রতি শরণার্থীদের যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহব্বান জানান। সঠিক পদক্ষেপ নিলে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় নিজেদের আবাসভূমে ফিরে যেতে পারবে বলেই তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘সঠিক, সম্মানজনক, নিরাপদ এবং স্বেচ্ছায় শরণার্থীদের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করতে মিয়ানমারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। মিয়ানমারের সকল সংখ্যালঘু এবং নির্যাতনের শিকার জাতিগোষ্ঠীর জন্যেই এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’
ব্যাচলেট আশংকা প্রকাশ করেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘর্ষের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি নিয়ে আরো দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হবে । তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির সঙ্গে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সংঘাত পরিস্থিতির অবনতির ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। যার প্রভাব প্রদেশটির সাধারণ জনতার ওপরে এসে পড়েছে।’
এই কারণেই গতকাল শুক্রবার সংস্থাটি পৃথক এক বিবৃতিতে বাংলাদশের প্রতি রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার হয়ে যে সকল শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন তাদের আশ্রয় দেয়ার আহব্বান জানায়। জেনেভায় ওএইচসিএইচআর মুখপাত্র আন্দ্রেজ মেহেসিক রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পরেই এই আহব্বান জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, ‘আমাদের কাছে প্রতিদিনই সংবাদ আসছে রাখাইন রাজ্যের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে সেখানকার অনেক নাগরিক প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে চাইছেন। আমরা শরণার্থীদের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সকল রকম সহযোগিতা দেব। এবং দেশটিকে অবশ্যই নতুন আগত শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে উদারতা দেখাতে হবে।’
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের পক্ষে নতুন করে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন। এসময় তিনি মিয়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাধা সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন। সম্পাদনা : ইকবাল খান