লিহান লিমা : ভারতে ১৩ হাজার কোটি রুপির প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত নিরব মোদি ব্রিটেনে বহাল তবিয়তে হীরের ব্যবসা করছেন। লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে প্রায় ৭২ কোটি রুপির তিন বেডরুমের ফ্ল্যাটে থাকছেন তিনি। ব্রিটেনের দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ এই তথ্য জানিয়েছে। ডেইলি মেইল, এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ভারতের তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে, শুক্রবার মহারাষ্ট্রের সাগরপাড়ে তার ১০০ কোটি রুপির বাংলো অবৈধ স্থাপনার কারণে ধ্বংস করা হয়, তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। তা সত্ত্বেও ব্রিটেনে ন্যাশনাল ইনসুরেন্স নাম্বার খুলেছেন তিনি। এর অর্থ তিনি বৈধভাবে লন্ডনে ব্যবসা করতে পারবেন এবং ব্রিটেনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন।
টেলিগ্রাফের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কিভাবে তিনি এখনো ব্রিটেনে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এটি নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নে টানা ছয়বার ‘নো কমেন্ট’ বলেছেন নিরব মোদি। রিপোর্টার তাকে প্রশ্ন করেন, ব্রিটেনে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন কি না। তাও এড়িয়ে যান তিনি। এরপর রিপোর্টারকে এড়াতে তড়িঘড়ি হেঁটে একটি ক্যাবের কাছে গিয়ে থামেন, ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলার পর সেখান থেকে সরে যান। রিপোর্টার তাকে ফলো করতে থাকেন এবং একসময় তিনি অন্য একটি ক্যাবে উঠে চলে যান। টেলিগ্রাফ জানায়, সোহায় হীরের ব্যবসা চালু করেছেন মোদি। বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব সামান্যই, যা পোষা কুকুরকে সঙ্গে করে হেঁটেই পাড়ি দেন তিনি। এদিন তার পরনে ছিলো ৯ লাখ রুপি মূল্যের উটপাখির চামড়ার জ্যাকেট। এছাড়া এক বছর ধরে দা ঢাকা দেয়া মোদি নিজের চেহারায়ও পরিবর্তন এনেছেন। ক্লিন শেভড থাকা মোদির গালজুড়ে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, রেখেছেন গোঁফও।
ভারতের উচ্চপদস্থ সরকারি সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, ‘আমাদের বার্তা পরিস্কার, যদি আপনি জালিয়াতি করে থাকেন তবে আপনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি লন্ডনে আশ্রয়প্রার্থীর মতো বাস করছেন।’ লন্ডনের রাস্তায় মোদির আরামসে হাঁটা নিয়ে কংগ্রেসের টুইটে বলা হয়, ‘টেলিগ্রাফের সাংবাদিকরা মোদিকে খুঁজে বের করে ফেললেন। কেন মোদি সরকার তা করতে পারল না? কেন মোদিকে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে? নিরব মোদি নিজে পালিয়েছেন নাকি কেউ তাকে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছেন?’
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের তরফ থেকে নিরব ও তারা মামার বিরুদ্ধে ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ করা হয়। করস্বর্গ বলে খ্যাত অ্যান্টিগুয়া এন্ড বারবুডার নাগরিকত্ব আছে তার। এদিকে মোদি এখনো কিভাবে ব্রিটেনে ব্যবসা করে যাচ্ছেন এটি নিয়ে এখনো কোন মন্তব্য করেনি ব্রিটেন। সম্পাদনা : ইকবাল খান