যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি বাণিজ্যমন্ত্রীর
স্বপ্না চক্রবর্তী : বাংলাদেশী পণ্যের উপর জিএসপি সুবিধা তুলে নেয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী। তাই বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সুনামের সাথে এবং সফলভাবে বিশ্ববাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। সব শর্ত পূরণ করেও আমরা জিএসপি ফিরে পাচ্ছি না। যা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এবং ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত ‘২৬তম ইউএস ট্রেড শো ২০১৯’ এর উদ্বোধন করে এ সব কথা বলেন। আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইয়াল আর. মিলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বড় বাজার। উভয় দেশের বাণিজ্য ব্যালেন্স বাংলাদেশের পক্ষে। গত ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯৮৩.৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ১৭০৩.৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। তাই জিএসপি ফিরে পাওয়া এখন আমাদের সময়ের দাবি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা আগেও পেতো না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। টোবাকো, সিরামিক, প্লাস্টিকের মতো কিছু পণ্য রপ্তানির উপর জিএসপি সুবিধা প্রদান করা হতো। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়। বাংলাদেশের তৈরি পণ্যের ক্রেতা গোষ্টির পরামর্শ মোতাবেক বাংলাদেশ তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর পরিবেশ উন্নত, বিল্ডিং সেফটি, ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখন জিএসপি স্থগিত রাখার কোন কারণ নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে, জিএসপি সুবিধা বাংলাদেশ দেশকে ফিরিয়ে দেয়া। জিএসপি স্থগিত থাকায় বাংলাদেশের তেমন আর্থিক কেনো ক্ষতি না হলেও ইমেজের ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।
এর প্রেক্ষিতে রবার্ট মিলার জিএসপি ফিরিয়ে দিতে তার জায়গা থেকে সব ধরনের চেষ্টা করবেন বলে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি উত্তরোত্তর সাফল্যের পথে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নতি এখন দৃশ্যমান। আর এই উন্নয়নের পথে যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মেলার আয়োজকরা জানান, এবারের মেলায় দেশটির ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের ৭৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত মানের পণ্য ও সেবার প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য বিক্রয় হবে। প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বল রুমে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। মেলায় প্রবেশ ফি ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে স্কুল শিক্ষর্থীরা ড্রেস পরে এবং নিজের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে ফি ছাড়া মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান