৪ সংশোধনী প্রস্তাবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোট, থেরেসা চাননিজের প্রস্তাবে ৩য় ভোট, লেবাররা চায় দ্বিতীয় গণভোট
আসিফুজ্জামান পৃথিল : ব্রেক্সিট ইস্যুতে বৃহস্পতিবারও সরব ছিলো ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। এদিন ৪টি অতি-গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক্সিট সংশোধনী প্রস্তাবনায় ভোট দেন ব্রিটিশ এমপিরা। লন্ডন স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ১টায়) এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে হাউজ স্পিকার জন বেরকাউ এই ৪টি সংশোধনী ভোটাভুটির জন্য অনুমোদন করেন। এর একটি হলো ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদের সময়সীমা বর্ধন করে ২য় গণভোট আয়োজন করা। একটি হলো, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ায় এমপিদের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ সংক্রান্ত সংশোধনী। ৩য় সংশোধনীটি এনেছেন বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন। এই সংশোধনে ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে। ৪র্থ সংশোধনীটি হলো থেরেসার চুক্তিতে ৩য় দফা ভোট আটকে দেওয়া। বিবিসি, সিএনএন, গার্ডিয়ান।
থেরেসা মে জানিয়েছেন তিনি তার করা ব্রেক্সিট চুক্তি পাস করাতে আরো একটি ‘অর্থপূর্ণ ভোট’ আয়োজন করবেন। তিনি এমপিদের বলেন, তার চুক্তিটি যদি আরো একবার এমপিদের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়, তবে ব্রেক্সিটে দীর্ঘমেয়াদে দেরি হতে পারে। এ কারণে আগামী সপ্তাহেই ৩য় ভোট আয়োজন করতে চান তিনি। বুধবারই যে কোন পরিস্থিতিতে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পরিকল্পনা বাতিল করে দেন এমপিরা।
এদিকে দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে সবাই যখন আবারও মত দিচ্ছেন, থেরেসা সরকার এখনও এটি গ্রহণে নারাজ। থেরেসার সহকারি ক্যাবিনেট অফিস মন্ত্রী ডেভিড লিডিংটন বলেছেন, দ্বিতীয় গণভোট আবারও বিভেদ সৃষ্টি করবে। এছাড়াও গণভোট আবারও করতে চাইলে ব্রেক্সিটে দেরি হবে বলে জানান তিনি। লিডিংটনের মতে, এর ফলে সৃষ্ট ক্ষতি সামাল দেয়া যাবে না। ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ব্রেক্সিটের দীর্ঘমেয়াদে সময়সীমা বর্ধনের জন্য ইইউ নেতাদের আহŸান জানাতে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন, যতো দেরি হবে ব্রেক্সিট বিষয়ে ওয়েস্ট মিনিস্টার ততো ভালোভাবে গুছিয়ে উঠতে পারবে। টুইটারে নিজের এই ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন টাস্ক। এটি হলে ইইউ নির্বাচনের আগে ব্রেক্সিট নাও সম্ভব হতে পারে।
ব্রেক্সিট প্রত্যাহার চুক্তির মুখ্য বিষয় মূলত ৩টি। ইউরোপিয় ইউনিয়ন ত্যাগের সময় যুক্তরাজ্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ইউরোপিয় ইউনিয়নকে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার দেবে। যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিক ইইউ ভুক্ত দেশগুলোতে রয়েছেন তাদের এবং যুক্তরাজ্যে ইইউভুক্ত দেশগুলোর যেসব নাগরিক রয়েছেন তাদের কী হবে এবং নর্দান আয়ারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড রিপাবলিক এর মাঝামাঝি ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের সীমানা কীভাবে নির্ধারণ হবে এই বিষয়। ‘ব্রিটিশ এক্সিট’ নামটিকে সংক্ষেপে ডাকা হচ্ছে ব্রেক্সিট নামে। এটি হচ্ছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। ৪০ বছরের বেশি সময় ইউরোপিয় ইউনিয়নের সাথে থাকার পর ২০১৬ সালের ২৩শে জুন একটি গণভোট আয়োজন করেছিলো যুক্তরাজ্য। সেই গণভোটে ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিলো ইউরোপিয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে, আর থাকার পক্ষে ছিলো বাকি ৪৮ শতাংশ ভোট। কিন্তু সেই ভোটের ফলাফলের সাথে সাথেই ব্রেক্সিট হয়ে যায়নি। এই বিচ্ছেদ ঘটার কথা রয়েছে আগামী ২৯শে মার্চ।