ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অর্থ দান করলেন আজিম প্রেমজি
ফখরুল মজুমদার
আজিম প্রেমজি ফাউন্ডেশন সরাসরি শিক্ষা খাতে অবদান রাখছে। তাছাড়া ১৫০টিরও বেশি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা দিচ্ছে। এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো বহু বছর ধরে আর্থিক অনদ্রানের মাধ্যমে অধিকারবঞ্চিত ও প্রান্তিক ভারতীয়দের সেবা দিচ্ছে। আজিম প্রেমজির এই আর্থিক বদান্যতা ঠিক কত অঙ্কের তা ধারণা করাও কঠিন হয়ে যেতে পারে! আজিম প্রেমজি, তিনি ভারতীয় কংলোমারেট (বহুমুখী ও বহুজাতিক কোম্পানি) উইপ্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান। একজন কোটিপতি নয়, বরঞ্চ ধনকুবের বলাটাই মানানসই। বহু বছর ধরে তার বদান্যতা ও দানশীলতা বিশ্বাবাসী দেখেছে। এবার তিনি আরও বেশি অবাক করে দিয়ে তার বহুমুখী বহুজাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান উইপ্রোর ৩৪ শতাংশ শেয়ারকে দাতব্য কাজে বিলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলেন। এই সম্পদের পরিমাণ হয়তো অনেকের কাছেই অনুমান করা কষ্টসাধ্য। আদতে তা সাত দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় মানবহিতৈষী দানশীলতার নজির। ‘উইপ্রোর এই শেয়ার প্রেমজির নিয়ন্ত্রিত স্বত্বে সংরক্ষিত হওয়া সাপেক্ষে অপরিবর্তিত, অপরিমার্জিত ও অফেরতযোগ্য শর্ত মেনে চলে আজিম প্রেমজি ফাউন্ডেশনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ছাড়করণ ঘোষণা দেওয়া হলো এবং তার নিশ্চয়তা প্রদান করা গেল।’ ফাউন্ডেশনটি এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।
এই আদেশবলে আজিম প্রেমজির জনহিতৈষী কাজে দানকৃত সমগ্র আর্থিক কাঠামোর মূল্যমান গিয়ে দাঁড়াল ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মদ্র্রায় এর মূল্য এক লাখ ৪৬ হাজার ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ রুপি। এই সমগ্র অনদ্রানের পরিমাণ হিসাব করলে দেখা যায় তা উইপ্রো লিমিটেডের মালিকানাধীন সমদ্রয় আর্থিক কাঠামোর ৬৭ শতাংশ। এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উদ্দেশ্য হলো শিক্ষা ও সংশ্লিষ্ট মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে পেশাদার মানুষ তৈরি করা। সেই লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন শিক্ষা বিভাগ চালু করে যাচ্ছে। ডিগ্রি প্রদান ও শিক্ষা কর্মসূচি চালু রয়েছে। এখানে নানামুখী গবেষণাও চলছে। ফাউন্ডেশনটি আশা করছে আগামী বছরগুলোতে গুরুত্ববহ নানা রকম অবদান উত্তরোত্তর বাড়াতে সক্ষম হবে। এক বিবৃতিতে তারা আরও বলে, শিক্ষা খাতে কাজ করা বর্তমানের এক হাজার ৬০০ লোকবল এবং বৃত্তিপ্রদান কর্মসূচিকে তিনগুণ করা হবে। ব্যঙ্গালুরু ভিত্তিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা পাঁচ হাজার পর্যন্ত বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হবে ৪০০ অনুষদ সদস্য। ফাউন্ডেশনটি ভারতের উত্তরাঞ্চলে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবে বলে আশা করছে।
ভারতের অতিশয় ধনিক জনেরা যাদের নেট সম্পদের পরিমাণ ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, তারা পাঁচ বছর আগের তুলনায় এখন অনেক কম অর্থ দাতব্য কাজে ব্যয় করছে। গত সপ্তাহে এ খবর প্রকাশ করে ভারতের অর্থনীতিভিত্তিক দৈনিক মিন্ট। কিন্তু প্রেমজি নিশ্চয় ব্যতিক্রম। প্রেমজির বর্তমান বয়স ৭৩ বছর। ব্যাঙ্গালুরুভিত্তিক এই ধনকুবের ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধনী মানুষ।
বøুমবার্গের জরিপ অনুসারে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনীদের তালিকায় তার অবস্থান ৫১তম।