ওভারিয়ান ক্যান্সারের কারণ হতে পারে ট্যালকম পাউডার!
হ্যাপি আক্তার
শিশুটির ত্বককে কোমল আর নরম রাখার জন্য চোখ বন্ধ করেই এতোদিন ব্যবহার করতেন বাজারে প্রচলিত ট্যালকম পাউডারগুলো। শুধু শিশুরা নয় নারী পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সের মানুষই ত্বকের মোলায়েম ভাব বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করে থাকেন পাউডার। এবার বোধহয় সে দিনটি ফুরালো। কিন্তু জানেন কি এই প্রসাধনী কতটা ক্ষতিকারক! শতশত বছর ধরে চলে আসা ট্যালকম পাউডার থেকে হতে পারে ভয়াবহ ওভারিয়ান ক্যানসার।
আরবি শব্দ ট্যাল্ক থেকেই এসেছে ট্যালকম শব্দটা ট্যাল্ক সহজে আর্দ্রতা শোষণ করতে পারে বলে এখন অনেকেই ত্বকে ব্যবহার করেন এই পাউডার । চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই ট্যাল্কে ম্যাগনেশিয়াম, সিলিকন এবং কিছু পরিমাণে অ্যাসবেসটস পদার্থ থাকে । এই অ্যাসবেসটস থেকেই ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বেশিরভাগ নামি ব্র্যান্ডের পাউডারে প্রচুর মাত্রায় স্টার্চ থাকে, যা শরীরে বিভিন্ন অংশ জমতে জমতে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। তাই যারা মনে করেন পাউডার ব্যবহার করলে সংক্রমণ থেকে দ‚রে থাকা যায়, তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। পাউডারের সঙ্গে ওভারিয়ান ক্যানসারের সরাসরি যোগ রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে যদি কেউ শরীরের গোপন অংশে পাউডার লাগান, তাহলে এক সময় গিয়ে ওভারিয়ান ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ওভারিয়ান ক্যানসারের লক্ষণগুলো-
অস্বাভাবিক ব্যথা : তলপেটে অস্বাভাবিক ব্যথা হবে। যা বদহজম বা পিরিয়ডের ব্যথা থেকে আলাদা। এইরকম ব্যথা দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
কোমরের উপরের অংশে ব্যথা : পেটে অসহ্য ব্যথার কারণে পিঠের নিচের অংশে ব্যথা হতে পারে। ব্যথাটি সাধারণ ব্যথা থেকে অনেকটা আলাদা।
হজমের সমস্যা : বদহজম, বমি বমি ভাব, গ্যাস, বুক জ্বালা ইত্যাদি এগুলো সব ওভারিয়ান ক্যানসারের লক্ষণ।
পেট ফুলে যাওয়া : আপনি কি পেটে গ্যাস আছে এমন অনুভব করেন? এবং হঠাৎ করে আপনার জামাকাপড় টাইট হয়ে যায়, তবে সতর্ক হোন। হয়তো টিউমার বড় আকার ধারণ করে ফেলেছে যার কারণে এই সমস্যাগুলো দেখা দিয়েছে।
খিদে কমে যাওয়া : এই ক্যানসার হলে শরীরের মেটাবলিজম প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়ে। যার কারণে আপনি যে খাবার খান তা আর হজম হয় না। ফলে খিদে কমে যায় এবং খাওয়ার রুচি হারিয়ে যায়।
ক্লান্তি : আপনি কি খুব অল্প কাজে বেশি ক্লান্ত হয়ে যান? এমনটি হলে সাবধান। হ্যাঁ হয়তো এটি ওভারিয়ান ক্যানসারের লক্ষণ নাও হতে পারে, তবে অল্প কাজে বেশি ক্লান্ত হয়ে যাওয়া যে কোনও বড় রোগের প‚র্ব লক্ষণ।
ঘনঘন প্রস্রাব : ওভারিনের ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ ঘনঘন প্রস্রাব। ইউরিন ইনফেকশন কারণে এটি হতে পারে। তাই যদি অনেক দিন ধরে এমন হয় তবে দেরি না করে দ্রæত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া : এই দুটি বিপরীত সমস্যা হলেও ওভারিয়ান ক্যানসারে এই দুটি সমস্যা একসঙ্গে দেখা দিতে পারে। বেশি দিন এর কোনটিতে ভুগতে থাকলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া : ক্যানসারের শুরুর দিকে এই লক্ষণটি দেখা দিয়ে থাকে। ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়া হঠাৎ করে যদি আপনার ওজন অনেক কমে যায়, তবে দ্রæত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
গোপনাঙ্গে রক্তপাত : বেশির ভাগ ওভারিয়ান ক্যানসারের শুরুর লক্ষণ এটি হয়ে থাকে। মেনোপজের পর হঠাৎ করে রক্তপাত হয়ে তবে তবে অব্যশই দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ এটি যে কোনো ক্যানসারের অন্যতম একটি লক্ষণ। (একুশে টেলিভিশন অনলাইন থেকে)