তিনজনের মধ্যে একজন জানেন না ভোক্তা অধিকার কি
দেবদুলাল মুন্না : ঢাকায় জীবনযাত্রার খরচ বাড়ছে। কিন্তু ৩০ শতাংশ মানুষ জানেন না ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে। গতকাল ছিলো ভোক্তা অধিকার দিবস। জীবনযাত্রার খরচ বাড়ার কথাটি নিশ্চিত করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় জীবনযাত্রার খরচ বাড়ছে, কিন্তু অনেকেই জানেন না ভোক্তা সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে।’ কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) দাবি করছে, ২০১৮ সালে ঢাকায় জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে ৬ শতাংশ। তবে সেটা ২০১৭ সালের থেকে কম। তবে গত দুই বছরে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে ১৪.৪৪ শতাংশ। ১৫টি বাজার থেকে ১১৪টি খাবার এবং ২২টি দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্যের মূল্যতালিকা সংগ্রহ করে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে ক্যাব।
এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মহাপরিচালক শফিকুল ইসলাম লস্করের দাবি দাবি প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ জানেন এ আইন সম্পর্কে। লোকবলের অভাবে টার্গেট অনুযায়ী সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তিনি। কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব বলছে ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে বাড়াতে হবে বাজার তদারকি। ক্রেতাদের অধিকার আদায়ে ২০০৯ সালে করা হয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন। একই বছর এই আইন বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠা করা হয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ধীরে ধীরে এ অধিদপ্তরের বিস্তৃতি ছড়িয়েছে ৬১ জেলায়। বেড়েছে অভিযোগ প্রাপ্তি ও নিষ্পত্তির সংখ্যাও।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৯ সালে আইনটি কার্যকর হওয়ার পর ২০১০ সালে ওই আইনের আওতায় অধিদপ্তরে অভিযোগ এসেছিল মোট ৭৩টি। সব কটিই নিষ্পত্তি হয়েছে। পরের তিন বছর অভিযোগের হার ছিল আরো কম। তবে এর পর থেকে বছর বছর বাড়ছে অভিযোগ তথা মামলা। সেই সঙ্গে প্রতিকারও পাচ্ছেন ভোক্তারা। ২০১৪ সালে অভিযোগ জমা পড়ে ৫৩৭টি, সব কটিই নিষ্পত্তি হয়। ২০১৫ সালে ৬৬২টি অভিযোগ জমা পড়ে, যার মধ্যে একটি ছাড়া সবই নিষ্পত্তি হয়। ২০১৬ সালে অভিযোগ পড়ে ছয় হাজার ১৪০টি। সবগুলোয়ই নিষ্পত্তি হয়। ২০১৭ সালে নয় হাজার ১৯টি অভিযোগ জমা পড়ে। এরমধ্যে আট হাজার ১২২টি নিষ্পত্তি হয়। ২০১৮সালে অভিযোগ জমা পড়ে একহাজার ৮৯৭টি। কিন্তু নিষ্পন্ন না হওয়া অভিযোগের মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ জমা দেয়ার পর অভিযোগকারী আর সাড়া দেননি। ফলে অভিযোগগুলো ‘নথিভুক্ত’ করে রাখা হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মাসুম আরেফিন বলেন, ‘এই আইন সম্পর্কে আরও মানুষকে সচেতন হতে হবে। আমরা অবশ্য ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছি।’ সম্পাদনা : রেজাউল আহসান