ই-সিগারেট নিষিদ্ধকরণ নিয়ে দ্বিধায় ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
সাউথএশিয়ান মনিটর : ২) ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ই-সিগারেটসহ ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম বিক্রি, উৎপাদন, বিতরণ, বাণিজ্য আমদানি ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার তিন মাস পর দেশের শুল্ক কর্তৃপক্ষ গত বছরের নভেম্বরে নড়েচড়ে বসে। সব মূখ্য চিফ কমিশনার ও রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদফতরকে এসব পণ্যের পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়।
৩) কেন্দ্রীয় পরোক্ষ শুল্ক বিভাগের চোরাচালন দমন ইউনিট ভারতের তামাক ও এন্ডস লবির মধ্যকার দ্ব›দ্ব তীব্র করেছে। এই দ্ব›দ্ব তীব্র হয়েছে এন্ডস লবিগুলোর বৈষম্যের শিকার হওয়ার বক্তব্য জোরালোভাবে উপস্থাপনের ফলে। তাদের দাবি, সিগারেট, জর্দার মতো তামাকজাত পণ্য কোনো ধরনের বিধিনিষেধ ছাড়াই বিক্রি অব্যাহত থাকার পরও তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৪) এই দ্ব›েদ্বর মূলে রয়েছে, প্রমাণহীন এই ধারণা যে বড় বড় সিগারেট প্রস্তুকারী কোম্পানি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে দিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করাতে সক্ষম হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষণায় নিষেধাজ্ঞার পক্ষে কিছু যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়েছে যে ই-সিগারেট, উত্তাপ সৃষ্টি না হওয়া সরঞ্জাম, ভেপ, ই-শিসা, ই-নিকোটিন গন্ধী হুক্কাসহ এন্ডস এবং যে নামেই এ ধরনের সরঞ্জাম ও পণ্য পাওয়া যাক না কেন, সবই সাধারণভাবে সবার জন্য ও বিশেষভাবে শিশু, কিশোর, গর্ভবতী নারী, প্রজনন বয়সী নারীদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি করে। ঘোষণায় এন্ডস নিষিদ্ধ করার আরো কিছু প্রস্তাব তুলে ধরার হয়েছে। ৫) বিশেষ করে তামাকবিরোধী অ্যাক্টিভিস্ট সীমা সেগাল গত বছরের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে জনস্বার্থের দোহাই দিয়ে নিষিদ্ধ করার যেসব যুক্তি পেশ করেছিলেন, তা সামনে আনা হয়েছে। মামলাটি হাইকোর্টে চলতে থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকার তোতা পাখির মতো বলে চলেছে, এন্ডস প্রচলিত তামাক পণ্যের মতোই মানুষের জন্য ক্ষতিকর এবং এর কোনো স্বাস্থ্যগত উপকারিতা নেই। ৬) বৈশ্বিক ই-সিগারেট ও হিটস্টিক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা স্বীকার করেছেন যে তাদের পণ্যরাজি ‘ক্ষতিকর।’ কয়েকজন প্রতিনিধি সাউথ এশিয়ান মনিটরকে বলেন যে স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ভালো বা খারাপের মধ্যে আপস করা যায় না।
তবে তারা আরো বলেন, ভোক্তা-তাড়িত বাজারে লোকজনের কাছে খারাপ ও আরো খারাপের মধ্যে কিছু বিকল্প বেছে নেয়ার সুযোগ থাকা প্রয়োজন।
৭) ই-সিগারেট ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে সাঙ্ঘর্ষিক দাবি অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে তা অনেকটাই নির্ভর করবে ই-সিগারেটের তথাকথিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বিচার বিভাগের রায়ের ওপর। দিলি� হাইকোর্টের প্রধান আবেদনকারী সীমা সেগালের আইনজীবী ভুবনেশ সেগালের মতে, এন্ডস নিষিদ্ধ করা কোনো সমাধান নয়। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণলয়কে দ্রæততার সাথে এগিয়ে আসতে হবে কিছু সুনির্দিষ্ট, সময়োচিত নির্দেশিকা নিয়ে। কারণ এসব পণ্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিক্রি হচ্ছে, কিশোরেরা এগুলো গ্রহণ করছে। সম্পাদনা : এ. জামান