নাঈমা জাবীন : বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে মাঠে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ লক্ষ্যে বন্ডের আওতায় আমদানি করা পণ্য পাচার বা খোলাবাজারে বিক্রি বন্ধে বন্ড অটোমেশন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। এজন্য আজ সোমবার (১৮ মার্চ) স্টেকহোল্ডার ও আগামী বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সঙ্গে বৈঠক করবে এনবিআর।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ চলছে। যারা বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে এটিকে আধুনিকায়ন বা অটোমেশন করা হবে। এ লক্ষ্যে ‘সাইনেসিস’ নামে একটি আইটি ফার্মকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফার্মটি বিশ্বের অন্যান্য দেশ কীভাবে বন্ড সুবিধা দেয়, সে বিষয়ে গবেষণা করে মতামত দেবে। স্টেকহোল্ডার ও ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। জানা যায়, বন্ড খাতে অটোমেশন বাস্তবায়ন করতে ২ বছর সময় লাগতে পারে।
জানা যায়, রফতানিমুখী শিল্প কারখানাগুলো পুনঃরফতানির শর্তে শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানির সুযোগ পায়। এসব কাঁচামাল বা পণ্য সরকার-নির্ধারিত গুদামে (বন্ডেড ওয়্যারহাউস) রক্ষিত থাকে। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দেশে শুল্কমুক্ত পণ্য এনে অবৈধভাবে অপসারণের মাধ্যমে তা খোলাবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। বন্ড সুবিধায় আনা কাপড়, প্ল্যাস্টিক দ্রব্য, কাগজ পণ্য, ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট কার্ড, কার্ড বোর্ড, বৈদ্যুতিক পাখা, পেডিং (বেøজার বা জ্যাকেট তৈরির কাঁচামাল) ইত্যাদি দ্রব্য ও পণ্য ওয়্যারহাউজে যাওয়ার আগেই খোলাবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এ কারণে বন্ডেড পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান।
এদিকে বন্ড সুবিধার পণ্য কালোবাজারে বিক্রি এবং চোরাকারবারি ঠেকাতে গত দেড় মাসে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ২৬টি ঝটিকা অভিযান চালিয়েছে বলে জানা যায়। এতে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৩০ কোটি টাকার অনিয়ম উদঘাটন করা হয়েছে। দেশে বর্তমানে ৬ হাজার ৫৬৫টি প্রতিষ্ঠানের নামে বন্ড লাইসেন্স থাকলেও অনিয়মের কারণে ১ হাজার ৭৫৭ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করেছে কাস্টমস। আবার কারখানা বন্ধ থাকার পরও বন্ড লাইসেন্স আছে ২ হাজার ৪৩৮টি পোশাক ও প্যাকেজিং কারখানার।