ড. জাহিদ হোসেন বললেন, বড় বাজেট বাস্তবায়নেসরকারের সক্ষমতার অনেক সীমাবদ্ধতা আছে
আমিরুল ইসলাম : আসছে ৫ লাখ ২৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকার বড় বাজেট। যা চলতি অর্থ বছরের বাজেটের তুলনায় প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ বেশি। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গ্রামকে শহরে পরিণত করতে বাজেটে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। এতো বড় বাজেট আমাদের সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ কিনা? জানতে চাইলে বিশ^ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, বড় বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতার অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য সংস্কার লাগবে। বিকেন্দ্রীকরণসহ বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা বাড়ানো, সেবা প্রদানের মানসিকতা যেন তৈরি হয় সেজন্য জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে।
অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পাই আমরা প্রথমে যে আকার নিয়ে বাজেট শুরু করি বছর শেষে তা বাস্তবায়ন হয় না। কাজেই সেখানে সক্ষমতারতো একটা সীমাবদ্ধতা আছেই। শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছানোর জন্য সে সক্ষমতাটা আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বর্তমানে যা আছে সেটা দিয়ে সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, বাজেটের আকার পূর্বের চেয়ে বড় সব সময়ই হয়ে আসছে। বরাবরই যে সমস্যাটা দেখা গেছে বাজেটের ফলাফল পেতে অনেক সময় লেগে যায় ও খরচ অনেক বেশি হয়। এমনিতে বাজেটের আকার বৃদ্ধি করে দেয়া সহজ। আকারটা বৃদ্ধির ফলে দুইটা প্রশ্ন আসে Ñ ১. বর্ধিত আকারটা সুষ্ঠু বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কিনা? মন্ত্রণালয়গুলোর যে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা আছে। গ্রামে শহরের সুবিধা দিতে গেলে সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবর্তন আনতে হবে। গ্রামে গিয়ে কাজ করতে হবে। এখন কী ধরনের সেবা দিয়ে আমরা শুরু করবো? বিদ্যুৎ সেবাতো যাচ্ছে। রাস্তাঘাট, পানি, স্যানিটেশন, শিক্ষা এগুলোই তো মৌলিক সেবা যেটা গ্রামে শহরের মতো পাওয়া যায় না। এখন এগুলোর ক্ষেত্রে কী ধরনের সংস্কার করা হবে? শুধু বাজেটের আকার বৃদ্ধি করলেতো আর সেবা পৌঁছাবে না, গ্রামের মানুষের কাছে যেনো সেবাগুলো যায় সেটার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষকে খরচ করতে হবে সেবা দেয়ার জন্য, শুধু বাজেটের আকার বৃদ্ধি করলে হবে না। বাজেটের বিস্তারিত আমরা পরে জানতে পারবো, যেটা বৃদ্ধি হচ্ছে সেটা কোন খাতে হচ্ছে। সেখানে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য কি ধরনের প্রশাসনিক সংস্কার হচ্ছে। ২. আকার বৃদ্ধি হবে কিন্তু এ বছর রাজস্ব আদায়ে তো অনেক ঘাটতি আছে। আগামী বছর রাজস্ব আদায়ও বৃদ্ধি করতে হবে। অর্থায়নের জন্য ব্যাংক থেকে টাকা নেয়া হবে না বৈদেশিক সাহায্যের মাধ্যমে আসবে দেখতে হবে সেটা কীভাবে নির্ধারণ করা হয়। আর্থিক পরিকল্পনাটা কি? সেটা ঠিক না থাকলে আকার বৃদ্ধিটা বাস্তবে অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে।