নদীমুক্তির পদক্ষেপ সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ
ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম : মনে হচ্ছে সরকার নদীদস্যুর কবল থেকে নদীগুলো রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। কাল তোরাগতীরের ৩১৭ স্থাপনা উচ্ছেদে আওয়ামী লীগের কার্যলয়ও বাদ যায়নি। এই তো চাই! নদী আমাদের জীবনপ্রবাহের মতো। আমাদের অস্তিত্বেরই অংশ। তারও রয়েছে জীবনসত্ত্বা। জোয়ারে-ভাটায় সে অবিরাম নৃত্যরতা। আপন আনন্দে যে কল্যাণবারি ছড়ায়, আমাদের কৃষিতে, অর্থনীতিতে, শিল্প-সাহিত্য ও জীবনে। আমরা নদীমাতৃক বটে, তবু নদী আমাদের বন্ধু, প্রেয়সী, স্বপ্ন-সহচরী। বাংলার সংগীত ও শিল্প-সাধনা নদীকে বাদ দিয়ে কি চলে?
শুধু তোরাগ এবং বুড়িগঙ্গা নয়, আমরা সব নদীর মুক্তি চাই। তেরশ নদীর দেশে এখন হয়তো তেরটি নদীর শরীরও আর ভালো নেই। মরেছে অসংখ্য। দোষণে-দখলে দিশাহারা যারা বেঁচে আছে। ওদের দিকে যদি আমরা না তাকাই ওরাও মরে যাবে, পচে যাবে। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা, তোরাগ, বালুতে আমরা দেখেছি শুঁশকের খেলা। আজ মাছও নেই সেখানে। জল সেখানে জীবন নয়, জল সেখানে মৃত্যু। যে জলে মাছ বাঁচে না, যে জল খেলে মানুষও মরে। কৃষকের খেতে গেলে ধান মরে। বলুন, এই কি নদীর বেঁচে থাকা? অতি মুনাফার শিল্পবর্জ্য আর অসচেতন মানুষের অবিমৃশ্য অনাচারে নদীগুলো আজ দুষিত ড্রেন।
সরকার! আপনাকে সাধুবাদ জানাই। দখল-দূষণ উভয়ই মুক্ত করে দেন আমার নদীর। নদী আমাদের এমন এক মাতা, প্রেয়সীÑযা আমার হয়েও সকলের। কবি যখন প্রশ্ন করেন, ‘এ জ্যোৎস্নায় নদী তুমি কার?’ আমি তো বলি, ‘আমার’। আপনিও কি বলেন না, ‘আপনার’? আমাদের নদীকে আমরা বাঁচাবো। সরকার আপনার পদক্ষেপে আমাদেরও সঙ্গে রাখুন। জনগণ সাথে থাকলে আর আপনার নিরপেক্ষ রক্তচক্ষু থাকলে, কার সাধ্য দখলমুক্ত নদীকে আবার দখল করে? দূষণমুক্ত নদীকে আবার দূষিত করে?