দেশের বাজারে মার্কিন ডলারের সংকট তীব্র হয়েছে, ফলে বেড়েই চলছে ডলারের দাম
রমজান আলী : ২. আমদানি-রফতানির ভারসাম্য না থাকা, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ, অর্থ পাচারসহ নানা কারণে ডলারের বাজারে এ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।
৩. কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ৮৪ টাকা ২৫ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে, যা এক বছর আগের তুলনায় ১ টাকা ২৯ পয়সা বেশি। তবে সাধারণ মানুষ, যারা ভ্রমণ করতে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের ৮৬ টাকা দরের উপরে কিনতে হচ্ছে ডলার।
৪. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই- জানুয়ারি) ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ২ হাজার ৩৮০ কোটি ২০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে ৩ হাজার ৩৪৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সেই হিসেবে জানুয়ারি শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৯৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা দরে) ৮১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
৫. আলোচিত সময়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব (-) ঋণাত্মক রয়েছে। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৩৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫৪০ কোটি ২০ লাখ ডলার। ৬. বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৩ হাজার ১৪৯ কোটি ডলার। এর আগে ২০১৭ সালের জুনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার রিজার্ভ অতিক্রম করেছিল।
৭. ডলারের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ডলারের দাম বাড়ার প্রধান কারণ বাণিজ্য ঘাটতি। যে হারে আমদানি হচ্ছে সেই হারে রফতানি আয় হয়নি। বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে ঋণাত্মক হয়ে গেছে। আর এটি পূরণ করতে গিয়ে বাড়তি চাপে ডলারের দাম বেড়েছে।
৮. মানি এক্সচেঞ্জের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর থেকেই ডলারে সঙ্কট রয়েছে। এর প্রধান কারণ, যে পরিমাণ আমদানি এলসি খোলা হয়েছে, সে পরিমাণ ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে নেই। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করছে, সেটি চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। আবার এখন হজের নিবন্ধনের জন্য বাড়তি ডলার লাগছে। সবমিলিয়ে চাহিদা বেশি থাকায় ডলারের দাম বেড়েছে।