মধ্যম আয়ের বাংলাদেশে ব্রিটিশ সহায়তার ধরনও বদলাবে, জানালেন হাই কমিশনার ডিকসন
বিডিনিউজ : বিশ্বসভায় বাংলাদেশ যেহেতু মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছে গেছে, সেহেতু আগামীতে যুক্তরাজ্যের সহায়তার ধরনও কিছুটা বদলাবে বলে জানিয়েছেন নতুন ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট সি ডিকসন।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যালয়ে প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেছেন, এতদিন বাংলাদেশকে সহযোগিতা দেওয়ার ক্ষেত্রে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও অপুষ্টি রোধ করার মত বিষয়গুলো যুক্তরাজ্যের কাছে বেশি মনোযোগ পেত। এখন যেহেতু অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে, সেহেতু আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের বিষয়গুলো যুক্তরাজ্যের কাছে বেশি গুরুত্ব পাবে বলে মনে করেন ডিকসন। তিনি মনে করেন, আগামী দিনে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য ওই সহযোগিতা বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে। ডিকসনের ভাষায়, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানোর যে লক্ষ্য বাংলাদেশ ঠিক করেছে, তা বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্যের ওই সহযোগিতা রসদ যোগাবে।
ঢাকা মিশনের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে আসার পর গত ১০ মার্চ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন রবার্ট ডিকসন। সেদিন তিনি বলেন, বাংলাদেশে তিনি যা যা করতে চান, তার তালিকা বেশ দীর্ঘ।
সেই তালিকার ওপর আলো ফেলার পাশাপাশি ব্রেক্সিটের প্রভাব এবং যুক্তরাজ্য কীভাবে বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশ হতে সহযোগিতা করতে পারে, সেসব বিষয়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঙ্গে কথা বলেছেন হাই কমিশনার।
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী। ব্যবসার দিক দিয়েও বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগ আসে যুক্তরাজ্য থেকেই।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং, জ্বালানি, অবকাঠামো, শিক্ষা, কনসালটেন্সি ও রিটেইল খাতে কাজ করছে ২৪০টি ব্রিটিশ কোম্পানি।
বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। দুই দেশের সরসারি পর্যায়েও নিয়মিত কৌশলগত আলোচনা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করেছে। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আট শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচকও এখন বেশ ভালো অবস্থায় আছে।
ক্রমোন্নতির ধারায় থাকা এই বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের জন্যও আগ্রহের বিষয় বলে জানান ব্রিটিশ ফরেইন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের পশ্চিম বলকান ডেস্কে দায়িত্ব পালন করে আসা ডিকসন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে যে চমৎকার দৃঢ় সম্পর্ক এতোদিনে তৈরি হয়েছে, আমি তাকে আরও এগিয়ে নিতে চাই। আর ব্রিটেন যেহেতু ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা আমাদের জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ব্রিটিশ হাই কমিশনার বলেন, আমরা এটাকে বলি গেøাবাল ব্রিটেন, সেই লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে চাই।