বিদ্যুৎখাতের অনিয়ম দুর্নীতিরোধে ২০২৫ সালের মধ্যেই সব বিদ্যুৎ গ্রাহক প্রি-পেইড মিটার দিবে সরকার
শাহীন চৌধুরী : বিদ্যুৎ খাতের অনিয়ম দুর্নীতি দূর করতে সারা দেশেই সরকার পর্যায়ক্রমে প্রি-পেইড মিটার প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশের ১৭ লাখের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহককে পোস্টপেইড থেকে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সকল গ্রাহক প্রি-পেইড মিটারের অওতায় আসবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সব শহর এলাকা এবং ২০২৫ সালের মধ্যে গ্রাম এলাকার সব গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের মোট গ্রাহক সংখ্যা সোয়া তিন কোটি। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৯৩ শতাংশ বর্তমানে বিদ্যুত সুবিধা পাচ্ছে।
বর্তমানে দেশের আড়াই কোটি গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দেয়ার জন্য কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এজন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ছাড়াও ডিপিডিসি, ডেসকো, আরইবি, নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি কাজ করছে। পাঁচটি কোম্পানির পৃথক পৃথক প্রকল্পে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ৫. সম্প্রতি দেশের উর্ত্তঞ্চলের পাঁচ লাখ গ্রাহকের জন্য নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির জন্য আরও একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দ প্রায় সোয়া ৪শ’ কোটি টাকা। সবগুলো কোম্পানি মিলে পুরো প্রকল্পের বাস্তবায়নের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২১ সাল।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০২১ সাল পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া ইতিপূর্বে যে পাঁচটি কোম্পানি এ নিয়ে কাজ করছে তাদের অগ্রগতিও যথেষ্ট নয়। এই পাঁচ কোম্পানি এ পর্যন্ত মাত্র আড়াই লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দিতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে দেশের সোয়া তিন কোটি বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্যে যাদের প্রি-পেইড মিটার দেয়া হয়েছে তাদের বেশীর ভাগই নগর কেন্দ্রিক। এক্ষেত্রে অবশ্য চার কোম্পানির মধ্যে ডিপিডিসি এগিয়ে রয়েছে। যদিও টার্গেটের তুলনায় এই অগ্রগতিও নগণ্য। সম্প্রতি দেশে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ লাখ গ্রাহকের ঘরে বৈদ্যুতিক স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের আরেকটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এজন্য ‘নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) একটি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার গ্রাহকের ঘরে এসব প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হবে।
অবশ্য প্রি-পেইড মিটার প্রকল্পকে একটি উচ্চাভিলাসী প্রকল্প আখ্যা দিয়ে জ্বালনি বিশেষজ্ঞ ড: এম তামিম এ প্রতিবেদককে বলেন, এ প্রকল্পের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। তবে প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন করতে পারলে তা বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য ভালো হবে। এতে বিদ্যুতের অপচয় রোধ হবে চুরি ও দুর্নীতি বন্ধ হবে এবং গ্রাহকরাও বিদ্যুৎ ব্যবহারে আরও সাশ্রয়ী হবেন। সম্পাদনা : ইকবাল খান