সুদ মওকুফ সুবিধা পাচ্ছেন ঋণ খেলাপিরা
সোহেল রহমান : খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে সরকারের প্রণীতব্য নতুন নীতিমালার আওতায় যেসব ঋণ খেলাপিরা ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা পাবেন, তাদের ঋণের সুদ মওকুফ করা হতে পারে। এক্ষেত্রে ঋণের ওপর অনারোপিত সুদ শতভাগ এবং ব্যাংকের আয় খাত ডেবিট না করে আরোপিত সুদ সুদবিহীন একটি পৃথক ব্লক একাউন্টে রাখা হবে। ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধের পর ব্লক একাউন্টে রাখা সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে বিবেচিত হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ক্ষেত্র বিশেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর তহবিল ব্যয়ে (কস্ট অব ফান্ড) ঘাটতি হলেও ঋণের সুদ মওকুফ করা হবে। এক্ষেত্রে অর্থের পরিমাণ বিবেচ্য বিষয় হবে না। তবে কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে এ সুবিধা দেয়া হবে শুধু সেগুলো চিহ্নিত করা হবে। প্রয়োজনে এক্ষেত্রে বিধিমালা সংশোধন করা হবে।
জানা যায়, এর বাইরেও যদি কোনো সুদ থাকে, সেগুলো পৃথক আরেকটি ব্লক অ্যাকাউন্টে রেখে দুই বছরের গ্রস পিরিয়ড সুবিধা দিয়ে ১৫ বছরে পরিশোধের সুবিধা দেয়া হবে।
তবে ঋণ খেলাপিদের সুদ মওকুফে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এ ধরনের সুপারিশের সঙ্গে এ-সংক্রান্ত বৈঠকে ভিন্নমত পোষণ করছেন কেউ কেউ। তাদের মতে, বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী, ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সুদ মওকুফ করতে পারে। কিন্তু ব্যাংকের আয় খাত ডেবিট ও কস্ট অব ফান্ড ঘাটতি করে কোনোভাবেই সুদ মওকুফ করা ঠিক হবে না। এতে আমানতকারীদের স্বার্থ ক্ষুণœ হবে এবং ব্যাংকের মুনাফায় বিরূপ প্রভাব পড়বে।
জানা যায়, যেসব ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন সুবিধা গ্রহণের পরও নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না, তারাও এই ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা পাবেন। তবে পূর্বের সুবিধা গ্রহণের পর যে সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, ১৫ বছর থেকে সেই সময়টুকু বাদ দিতে হবে।
এছাড়া যাদের ক্ষেত্রে মামলা চলমান রয়েছে, সুবিধা প্রাপ্তির পর ১৫ দিনের মধ্যে তাদেরকে মামলা বাবদ ব্যাংকের খরচ পরিশোধ করতে হবে।
পুনঃতফসিল সুবিধা গ্রহণের পর কেউ যদি পর পর ঋণের দুই কিস্তি (ত্রৈমাসিক হিসেবে) প্রদানে ব্যর্থ হন, তাহলে সেক্ষেত্রে প্রদেয় সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান