কম বাজেটে গৃহকোণ যেভাবে সাজাবেন…
আবুল বাশার
সারা দিন কর্মস্থলে খাটাখাটুনির পর ঘরে ফিরে তখনই প্রশান্তি মেলে, যখন ঘরটা পরিপাটি ও মনের মতো করে সাজানো-গোছানো থাকে। নিজের বাসা বা ঘর এমন জায়গা, যেখানে উপস্থিত থাকে আত্মপ্রশান্তির সবক’টা উপকরণ। তবে খুব নিখুঁত করে ঘর সাজাতে গেলে একটু-আধটু খরচ হয়, এ কথাও সত্য। তাই অনেক সময় অনেক নকশায় ঘর সাজানোর ইচ্ছা থাকলেও সবসময় তা সম্ভব হয় না। কিন্তু চাইলেই একটু বুদ্ধি খাটিয়ে খুব স্বল্প খরচে নতুন করে গোটা বাসা সাজানো যায়। এর জন্য অবশ্য একটু ঘোরাঘুরি করতে হবে, এতে পথের পাশেই আপনি পেয়ে যেতে পারেন পছন্দসই ঘর সাজানোর উপকরণ। জেনে নিন কম খরচে সুন্দর ঘর সাজানোর উপায়গুলো—
দেয়ালে রঙের খেলা : ঘরে যদি শূন্য শূন্য ভাব বিরাজ করে, তাহলে রঙ করে নিতে পারেন ঘরের দেয়াল। সেক্ষেত্রে ঘরের আকারকে প্রাধান্য দিয়ে রঙ নির্বাচন করতে হবে। জানেনই তো, দেয়ালে হালকা রঙ করলে ঘর বড় দেখায়, আর গাঢ় রঙ ঘরকে ছোট দেখায়। পুরো ঘর রঙ না করতে চাইলে ঘরে চোখে পড়ে ও দেয়াল সাজানো সম্ভব এমন একটি দেয়ালে উজ্জ্বল রঙ করে নিন। আসন পাতা : শুধু লিভিংরুম নয়, বারান্দা ও শোয়ার ঘরেও কায়দা করে বসার জায়গা রাখুন। লিভিংরুম বা বসার ঘরে সোফা বসাতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
আর সোফা রাখতে চাইলে কম নকশাবিশিষ্ট সোফা বানিয়ে নিতে পারেন কাঠ বা বাঁশ দিয়ে। শোয়ার ঘরে খাটের উল্টো দিকে মেঝেতে বসার ব্যবস্থা করে নিতে পারেন। চাইলে ছোট ছোট টুল রাখতে পারেন। আড়ং বা দেশীয় বুটিক হাউজগুলোতে পেয়ে যাবেন সুন্দর টুল।
নানা আকারের পিলো : বিছানা, ডিভান, সোফায় ছোট-বড় কুশন রাখা যেতে পারে। চেষ্টা করুন রঙ-বেরঙের কুশন রাখার। কারণ রঙিন কুশন ব্যবহার করলে ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
অল্প দামে কেনাকাটা : রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, দোয়েল চত্বর এসব স্থানে খুব অল্প খরচে ঘর সাজানোর উপকরণ পেয়ে যাবেন। রঙিন টেবিল ল্যাম্প, পুতুল, পাপশ, ফুলদানি, ফুলের টব, ঝাড়বাতি, ছবির ফ্রেম, শোপিস ইত্যাদি পাওয়া যায়। মাটি, পিতল, কাঠ, পাট ও বাঁশের জিনিসপত্র মোটামুটি দামে কিনে ফেলা যাবে এখান থেকে। তাই আসা-যাওয়ার পথে খেয়াল করুন এসব দোকান। অল্প অল্প করে দু-একটি জিনিস কিনুন।
অদল-বদল : অন্দরের সাজ প্রতি তিন মাস পর পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এতে একঘেয়েমি দূর হয়। অনেক সময় দেখা যায়, ঘরের আসবাব একটু অদল-বদল করলে ঘরের রূপ পাল্টে অনেক বেশি মনোরম হয়। বসার ঘরের সোফাসেট যে পাশে ছিল, এবার সে স্থান পাল্টে দিন। জানালা সুন্দরভাবে ব্যবহার করা যায় কিনা দেখুন। শোয়ার ঘরের বিছানাটার জায়গা বদলে নিয়ে যান অন্য কোথাও। তবে চেষ্টা করুন আলো ও জানালার সদ্ব্যবহার করার।
একটু বুদ্ধি খাটিয়ে : পুরনো রঙিন ওড়না বা কাপড় দিয়ে টেবিল ম্যাট, রান্নাঘর কিংবা স্নানঘরের জানালার পর্দা বানিয়ে নিন। তাছাড়া পুরনো টি-শার্টের বুকে বা পিঠে সুন্দর ছবি থাকলে সে অংশ ভালো করে কেটে ফ্রেমে বাঁধাই করে নিন। এবার মানানসই দেয়ালে টাঙিয়ে রাখুন। এখন ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। এগুলো দেখে অপ্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে বানিয়ে ফেলা যেতে পারে সুন্দরসব শোপিস ও ঘর সাজানোর উপকরণ।
মাটির জিনিসের খোঁজ করুন : বর্তমানে দেশীয় ঘরানায় ঘর সাজানোর প্রতি ঝুঁকছেন প্রায় সবাই। আর মাটির জিনিসপত্র দিয়ে খুব সহজে সুন্দর করে ঘর সাজানো যায়। দেশীয় ফ্যাশন হাউজে কম দামে পাওয়া যায় মাটির পুতুল, মুখোশ, ফুলদানিসহ বিভিন্ন ধরনের শোপিস। এছাড়া রাস্তায়ও অনেক সময় ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোয় পাওয়া যায় এসব জিনিস।