অ্যাপভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যয়, পাঁচ বছরে ১৫৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে
আবুল বাশার
তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে কেনাকাটার ক্ষেত্রে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় কিংবা বিলাসদ্রব্যই নয়, অ্যাপের বিষয়টিও এখন বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। প্রযুক্তি মানুষের জীবন অনেক সহজ করেছে। তবে আধুনিক প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট অ্যাপ। যে কারণে বিভিন্ন অ্যাপের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আগামী পাঁচ বছরে অ্যাপভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যয় ১২০ শতাংশ বেড়ে ১৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। ভোক্তারা এ অর্থ ব্যয় করবেন অ্যাপ স্টোর এবং গুগল প্লে স্টোরে। অ্যাপ স্টোর ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি সেন্সর টাওয়ার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সেন্সর টাওয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পেতে অ্যাপ কেনাকাটা বাড়ছে। বিভিন্ন অ্যাপের নির্ভরযোগ্য দুটি উৎস হলো অ্যাপলের আইওএস ‘অ্যাপ স্টোর’ এবং গুগলের ‘গুগল প্লে স্টোর’। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরে এ দুই অ্যাপ স্টোরের রাজস্ব দ্বিগুণ হবে। অ্যাপ স্টোরে ব্যয়ের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। অন্যদিকে গুগল প্লে স্টোরে ব্যয়ে শীর্ষে থাকবে দক্ষিণ কোরিয়া।
২০২৩ সাল নাগাদ আইওএস ডিভাইস ব্যবহারকারীদের অ্যাপ ও সাবস্ক্রিপশন বাবদ ব্যয় ৯ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে, যা গত বছরের চেয়ে ১০৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালের আইওএস ডিভাইস ব্যবহারকারীরা অ্যাপ বাবদ ৪ হাজার ৭০০ কোটি ডলার ব্যয় করেন। অন্যদিকে গত বছরের চেয়ে ১৪০ শতাংশ বেড়ে আগামী পাঁচ বছরে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত ডিভাইস ব্যবহারকারীদের অ্যাপ ও সাবস্ক্রিপশন বাবদ ব্যয় ৬ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে। রাজস্ব আয়ে অ্যাপ স্টোর এবং গুগল প্লে স্টোরের মধ্যে ব্যবধান দ্রæত কমে আসছে। বর্তমানে অ্যাপ থেকে দুই প্লাটফর্মের মোট রাজস্বের ৬২ শতাংশ আসছে আইওএস অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে। সেন্সর টাওয়ার গত বছরের জন্য অ্যাপভিত্তিক ভোক্তাদের ব্যয়ের যে হিসাব দিয়েছে তা অ্যাপের তথ্য বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান অ্যাপ অ্যানির হিসাবের চেয়ে কিছুটা কম। অ্যাপ অ্যানির তথ্যমতে, গত বছর আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্মের ব্যবহারকারীদের অ্যাপ ও সাবস্ক্রিপশন বাবদ ব্যয় মোট ৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে পৌঁছায়। অন্যদিকে সেন্সর টাওয়ারের তথ্যমতে, এ ব্যয় ছিল ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকায় আগামী পাঁচ বছরে অ্যাপ স্টোর রাজস্বে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি দেখা যাবে। অ্যাপ থেকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে থাকবে গুগল প্লে স্টোর। আগামী পাঁচ বছরে লাতিন আমেরিকায় গুগল প্লে স্টোরের রাজস্ব ২৮০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে, যা গত বছরের চেয়ে ৪০৮ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে একই সময়ে আফ্রিকার দেশগুলোয় গুগল প্লে স্টোরের রাজস্ব গত বছরের চেয়ে ২৯৬ শতাংশ বেড়ে ৪৩ কোটি ডলারে পৌঁছাবে।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আগামী পাঁচ বছরে অ্যাপ ও সাবস্ক্রিপশন বাবদ আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্ম ব্যবহারকারীদের ব্যয় ৪ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে, যা গত বছরের ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের চেয়ে ১১০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে ব্যয় হবে ৫০০ কোটি ডলার এবং গুগল প্লে স্টোরে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। রাজস্ব বিবেচনায় আগামী পাঁচ বছরে তাইওয়ান অ্যাপ স্টোরের শীর্ষ পাঁচ দেশের তালিকায় যুক্ত হবে এবং গুগল প্লে স্টোরে ব্যয় বিবেচনায় চলতি বছর শেষেই জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।