লালমনিরহাটে তামাক চাষ ছেড়ে চা-চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা
আনিস রহমান
এক সময়ের তামাক অধ্যুষিত এলাকা লালমনিরহাটে তামাকের চাষ ছেড়ে চা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। তামাকের চেয়ে কম পরিশ্রম ও লাভজনক হওয়ায় এখন চা চাষ করছেন জেলার কৃষকরা। সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ
তবে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের সহযোগিতায় হাতীবান্ধায় সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেড নামে একটি প্রসেসিং কারখানা গড়ে উঠলেও বিদ্যুৎতের লো-ভোল্টেজের অজুহাতে তা বন্ধ থাকায় চা পাতা বিক্রিতে ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে এসব কৃষকদের। ফলে পঞ্চগড় জেলায় গিয়ে চা পাতা বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
চা চাষিরা প্রতি কেজি সবুজ কাঁচা চা পাতা ৩৪ টাকা দরে কারখানায় বিক্রি করছেন। জেলায় ৫২ জন কৃষক ৭২.৮২ একর জমিতে চা বাগান গড়ে তুলেছেন। আরো ২০ জন কৃষক চা বাগান গড়ে তুলতে চা বোর্ডে চা চাষি হিসেবে নিবন্ধন করেছেন। মোট ৭২ জন কৃষক চা চাষে এগিয়ে এসেছেন। এতে ২০১৮ সালে মাত্র ৬৩ টন সবুজ কাঁচা চা পাতা উৎপাদন হলেও ২০১৯ সালে তা ৫ গুণ বেড়ে ৩১৫ টন কাঁচা চা পাতা উৎপাদন হবে বলে বাংলাদেশ চা উন্নয়ন বোর্ড ধারণা করছেন।
এছাড়া জেলায় নতুন করে আরো ২০০ একর জমিতে চা বাগান তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ চা উন্নয়ন বোর্ড জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় গড়ে তুলেছে একটি চা চারার নার্সারি। সেখান থেকে প্রতি চা চারা মাত্র ২ টাকা দরে বিক্রি করছেন কৃষকদের কাছে এবং কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছেন চা উন্নয়ন বোর্ড।
বাংলাদেশ চা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানান, প্রতি বিঘা জমিতে চায়ের চারা রোপন করতে মোট খরচ হয় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। লালমনিরহাট জেলায় এক বছরেই ওই চা গাছ থেকে চায়ের কাঁচা পাতা সংগ্রহ করা সম্ভব। ফলে প্রতি বিঘায় ১ম বছর চার হাজার টাকা, ২য় বছর ১৬ হাজার টাকা, ৩য় বছর ৩৪ হাজার টাকা, ৪র্থ বছর ৪৮ হাজার টাকা ও ৫ম বছর ৬৮ হাজার টাকার সবুজ কাঁচা চা পাতা বিক্রি করা সম্ভব।
পারুলিয়া এলাকার চা বাগান মালিক বদিউজ্জামান ভেলু ও গোতামারী এলাকার বিশ্বজিৎ জানান, কম পরিশ্রমে ও কম খরচে চা চাষ করে অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। তবে জেলার হাতীবান্ধায় টি প্রসেসিং কারখানাটি বন্ধ থাকায় চা পাতা বিক্রিতে ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডর লালমনিরহাট জেলা প্রকল্প পরিচালক আরিফ খান বলেন, এ এলাকার চাষিদের চা চাষে আগ্রহ দেখে বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে দুই বছর আগে সিঙ্গিমারী বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় একটি নার্সারি করা হয়েছে। এখান থেকে চাষিদের স্বল্প মূল্যে চায়ের চারা সরবরাহ করছি এবং চাষিদের চারা রোপণ ও পরিচর্যাসহ সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।