গ্রামীণফোনের কাছে সরকার পায় ১২ হাজার কোটি টাকা
বাংলা : গ্রাহক ও আয়ের বিচারে শীর্ষ অপারেটর গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসি ও এনবিআর মিলে এ অর্থ পাওনা দাবি করেছে। নিজস্ব নিরীক্ষার পর মোবাইল অপারেটরটির কাছে সরকারের মোট পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
অপারেটরটিকে বকেয়া পরিশোধে চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক। কমিশনের অংশের পাওনা অর্থ পরিশোধ করতে দুই সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।
১৯৯৭ সালে অপারেটরটি চালুর পর থেকে বিভিন্ন খাতে বিপুল বকেয়া জমেছে। অবশ্য বড় অংকের এ দেনা-পাওনা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অপারেটরটির মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দেন-দরবার ও আইনি লড়াই চলছে। এর মধ্যে ৮৪৯৪ কোটি এক লাখ টাকা দাবি করে মঙ্গলবার গ্রাহক সেরা অপারেটরটিকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। একই সঙ্গে গ্রামীণফোনের কাছে আরও ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা দাবি করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে কমিশন।
আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না পাওয়া গেলেও জানা গেছে, গ্রামীণফোন এ অডিট প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। এর আগে গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে চ‚ড়ান্ত হওয়া নিরীক্ষা প্রতিবেদনে কমিশনের নিয়োগ দেয়া অডিটর কোম্পানি সব মিলে ১১ হাজার ৫৩০ কোটি ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছিলো। এতে বিটিআরসি’র অংশ ছিলো সাত হাজার ৪৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা, যার মধ্যে শুধু সুদের পরিমাণ পাঁচ হাজার ১২৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। পরে সেই অডিটের নানান দিক নিয়ে আপত্তি তুলে গ্রামীণফোন প্রতিবেদনটি পুনরায় যাচাইয়ের আবেদন করে।
এ আবেদন আমলে নিয়ে কমিশনের অডিটর কোম্পানি তোহা খান জামান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস তা যাচাই বাছাই করে। এরপর সুদের অংক আরও এক হাজার কোটি টাকা বেড়ে যায়। এর আগে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে বিটিআরসি তোহা খান জামানকে জিপি’র অডিট করার জন্য নিয়োগ করে। ১৮০ দিনের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটি শীর্ষ অপারেটরটির কাছ থেকে খুব একটা তথ্য ও সহায়তা পায়নি।
কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারিতে নিরীক্ষা শেষ হয়। তখন ১৯৯৭ সালে গ্রামীণফোনের জন্মের সময় থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের অডিট করা হয়। গত বছর আবার যাচাই-বাছাইয়ের সময় অডিট কোম্পানি সুদের হিসাব করে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত। এতে পাওনার পরিমাণ আরও বাড়ে। তারও আগে ২০১১ সালে প্রথমবার গ্রামীণফোনে নিরীক্ষা চালিয়ে তিন হাজার ৩৪ কোটি ফাঁকি দেয়া হয়েছে বলে দাবি করে বিটিআরসি। তখন অপারেটরটি উচ্চ আদালতে গেলে অডিটর নিয়োগের প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি বলে তা বাতিলের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এরপর নতুন করে অডিটর নিয়োগ করা হয়। সম্পাদনা : শোভন দত্ত ও রেজাউল আহসান