আমাদের বিশ্ব • আমার দেশ • লিড ৫ • শেষ পাতা
পোশাক শিল্পের নতুন বাজার খুঁজতে রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বিজিএমইএ কমপ্লেক্স উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী
স্বপ্না চক্রবর্তী : হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবনের জায়গাটি দিলেও তা যেনো খালের উপর না যায় সে ব্যাপারে আগেই সতর্ক করেছিলেন বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ওই (হাতিরঝিলের বিজিএমইএ ভবন) জায়গাটা আমাদের দেয়া। বারবার বলেছিলাম ভবনটা খালের উপর যেন না যায়। সোনারগাঁও হোটেলের সঙ্গে সমন্বয় করে করতে বলেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা যখন পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় এলাম তখন দেখলাম খালের উপর করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেখানে যাওয়ার জন্য একটি সেতুও বানানো হয়।
গতকাল বুধবার বহুল আলোচিত বিজিএমইএর নতুন ভবন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাতিরঝিলকে চমৎকারভাবে উন্নয়ন করেছি। এখানে দুটি কাজ। ঢাকা শহরের যে রাস্তা ছিল বেশির ভাগই ছিল উত্তর-দক্ষিণমুখী রাস্তা। পূর্ব-পশ্চিমমুখী রাস্তা ছিলই না। সেই যোগাযোগটা যাতে সুন্দর হয়, পাশাপাশি এই জলাধারকে যেন ধরে রেখে দৃষ্টিনন্দন করা যায় সেটা করতে গিয়ে অনেক মামলা মোকাবেলা করতে হয়েছে। সেই জায়গা থেকে এই বিল্ডিংটা সত্যি কথা বলতে কী- তাকাতে গেলে একটা বাঁধার মতো মনে হয়।
উত্তরার ১৭নং সেক্টরের বøক এইচ ওয়ানে নির্মাণাধীন বিজিএমইএ কমপ্লেক্স ভবনের নিচতলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এমনিতেই জলাধারের সমস্যা। আগুন লাগলে পানির অভাব। সেগুনবাগিচায় একটা খাল ছিল। ধোলাইখালেও ছিল। কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ভবনটা ভেঙে ফেলতে হবে। বিশাল একটা জায়গা দিয়েছি। সেখানে ভবন হচ্ছে। এই কাজটা যে হচ্ছে তা ইতিবাচক। কিন্তু তারা ভবনের জন্য জায়গা কিনতে চাননি। আমরা দিয়েছি। যেহেতু কোর্টের রায় সেটা কার্যকর করতে হবে। যদি চলে আসা যায় কোর্টের রায় মানা হবে। নতুন ভবন উদ্বোধন করে দিয়েছি। ছয় তলা পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে। এই কাজ চলতে থাকবে।
এসময় পোশাক শিল্পের জন্য পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানের কূটনীতি কিন্তু অর্থনৈতিক কূটনীতি। প্রতিটি দূতাবাসকে নির্দেশনা দেয়া আছে। প্রত্যেক রাষ্ট্রদূতকে ঢাকায় ঢেকে দীর্ঘ মিটিং করেছি, কোন দেশে বাংলাদেশের কোন কোন পণ্যের বাজার রয়েছে তা খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। নতুন নতুন বাজার সৃষ্টির পাশাপাশি ফ্যাশন ডিজাইনিংয়েও গুরুত্ব দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের আহŸান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, গত ১০ বছরে পোশাক খাতের শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে আট হাজার টাকা করেছি। মালিকদের জন্য উৎসে করে ছাড় দিয়েছি। বাজেটে কর বসাতে পারি না, কিন্তু কমাতে পারি।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৫০ শতাংশ কমমূল্যে উত্তরার ১৭নং সেক্টরে ১১০ কাঠা জমি দেয়া হয় বিজিএমইএ’কে। সেখানে ১৩তলা ভবন নির্মিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ৬তলার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া ভবনটির পুরো কাজ শেষ হতে পারে ২০২০ সালের জুনে। তবে কয়েকটি তলার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় ও হাইকোর্টের নির্দেশের বাধ্যবাধকতায় চলতি মাসেই বিজিএমইএর প্রধান কার্যালয় উত্তরায় স্থানান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ নেতারা।
গণভবনে এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া উত্তরার নতুন ভবনে এসময় বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, প্রথম সহসভাপতি মঈনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু, সহসভাপতি এম এম মান্না কচি, সহসভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাছির, বিইউএফটির ভাইস চ্যান্সেলর মাজাফফর ইউ সিদ্দিকী, মোহাম্মদী গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হকসহ সংগঠনটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।