ব্যবসা শুরুর আগে…
আবুল বাশার
একটি সফল ব্যবসা দাঁড় করানো একেবারে অসম্ভব না হলেও বেশ কঠিন। ঝুঁকি নেয়ার মতো যথেষ্ট মনোবল না থাকলে ব্যবসায় সফলতা ধরা দেয়ার সম্ভাবনা শূন্য। অনেকে মনে করেন নেতৃত্বগুণের মতো এই ব্যবসাবুদ্ধিও মানুষ জন্মগতভাবে পায়। তবে সফল উদ্যোক্তারা মনে করেন, প্রখর জ্ঞান আর দূরদৃষ্টিই ব্যবসায় সফলতার প্রধান পুঁজি। একটি উদ্যোগ নেয়ার আগে গভীর পর্যবেক্ষণ এবং ধীরস্থির ও দৃঢ় পদক্ষেপই সফলতার দিকে যাওয়ার কঠিন যাত্রাকে সহজ করে দেয়।
তরুণ উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইয়ং এন্টারপ্রেনিউর কাউন্সিল (ওয়াইইসি) সব সময়ই হবু উদ্যোক্তাদের পাশে থাকে। সম্প্রতি ফোর্বস ম্যাগাজিনকে এমন পাঁচজন সফল উদ্যোক্তা কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন যা নতুনদের উপকারে আসবে। নতুন ব্যবসা শুরুর আগে যেসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দিয়েছেন তারা।
স্বাতন্ত্র : সব ব্যবসাই আলাদা বৈশিষ্ট্যের। ব্যবসার ধরনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, লোকবল ইত্যাদি নির্ধারণ করতে হয়। পাশাপাশি বাজারে চাহিদার ধরনও নিশ্চয় আলাদা হয়, সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। ব্যবসাটি যদি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র হয় তাহলে ভালো। সেক্ষেত্রে সরাসরি কাজে নেমে পড়াটাই উত্তম।
নিজের সীমা নির্ধারণ : নতুন ব্যবসা দাঁড় করাতে উদ্যোক্তার ঘাম ছুটে যায়। আর যদি হন প্রথম উদ্যোক্তা তাহলে তো ঘুম হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু না, পুরো জীবনটাই ব্যবসায় বিনিয়োগ করার কোনো মানে নেই। ব্যবসা যেন আপনার ব্যক্তিগত জীবনকেও গ্রাস করে না ফেলে তা নিশ্চিত করতে নিজের কাজের একটা রুটিন করা ভালো। এক একটা অর্জনের জন্য নিজেকেই পুরস্কার দিন। তাতে মন প্রফুল্ল থাকবে। পরিবারকেও সময় দিতে হবে। বাড়াতে হবে করপোরেট অভিজ্ঞতা : ব্যবসা শুরুর আগে করপোরেট সংস্কৃতিটা ভালো করে বুঝে নেয়া দরকার। সবচেয়ে ভালো হয় যে ধরনের উদ্যোগ নিতে চান তার কাছাকাছি ধরনের কোনো করপোরেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অভিজ্ঞতা অর্জন করা। করপোরেট পরিবেশে কয়েক বছর কাটালে উদ্যোগ শুরুর আগে গুছিয়ে পদক্ষেপ নিতে আপনার অবচেতন মনই আপনাকে পথ দেখাবে।
পেশাদারের সঙ্গে মিশুন : ধরুন আপনি কয়েক বন্ধু মিলে একটি ব্যবসা শুরু করতে চান। সেখানে আপনার পদ হবে চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও)। কিন্তু এই পদটি আসলে কী, কাজ ও কর্তৃব্যের আওতা কতোখানি সে সম্পর্কে আপনার কোনো পূর্ব ধারণা নেই। সবচেয়ে ভালো হয়, আপনি যে পদে কাজ করবেন কোনো করপোরেটে একই পদে কর্মরত এমন কারো সঙ্গে কথা বলা। শুধু প্রতিদিনের রুটিন কাজ ও দায়িত্বই নয়, আপনাকে জানতে হবে কোম্পানিতে আসলে আপনার অবস্থান কোথায়, মানুষ আপনাকে কীভাবে নেবে, আপনার ব্যাপারে তাদের প্রত্যাশা কী হতে পারে এবং সময়ের সঙ্গে আরো কী কী কাজে আপনাকে জড়িয়ে পড়তে হতে পারে সে সম্পর্কেও ধারণা রাখা ভালো।
কাস্টমারের কথা শুনুন : ব্যবসা সেটাই করা উচিত যেটা আপনি আন্তরিকভাবে পছন্দ করেন। শুধু বেশি লাভের আশায় কোনো ব্যবসা শুরু করলে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি! আপনি নিবেদিত না হলে সফলতা ধরা দেবে না। আপনার বরং উচিত টার্গেট কাস্টমারের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। কারণ তারাই তাদের জন্য কোনটা সর্বোত্তম সেটা আপনার চেয়ে ভালো জানে। আর তাদের পছন্দ ও মতামতের ভিত্তিতেই আপনাকে তালিকা ধরে ধরে এগোতে হবে।