ভারতের মাছ বাজারে চড়া দাম, বৈশাখী সকালে ইলিশ-পান্তা খাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা
রাশিদ রিয়াজ : পয়লা বৈশাখের আনন্দে মাতার প্রস্তুতি চলছে। নববর্ষের ভোরে পদ্মার ইলিশের সঙ্গে পান্তা না হলে, আগমনী যেন ঠিক জমে না। তাই সবার চাই- ইলিশ ভাজা, সঙ্গে পান্তা। কিন্তু আয়োজনে বাদ সাধছে চড়া ইলিশের বাজার। মাছের বাজারে বৈশাখী উন্মাদনা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুযোগ বুঝে রুপোলি ইলিশের দাম অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিগুণ, তিনগুণ হয়ে গিয়েছে একেকটা ইলিশের দাম।
বিক্রেতাদের আশঙ্কা, পয়লা বৈশাখের প্রাক্কালে এখন প্রতিদিনই ইলিশের দাম বাড়বে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি ওজনের একেকটি ইলিশের দাম হাঁকা হচ্ছে দেড় থেকে দু হাজার টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এই আকারের ইলিশ এক হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, ‘জাটকা ধরা ঠেকাতে নদীতে অভিযান চলছে। ফলে সরবরাহ কম। কিন্তু পয়লা বৈশাখ এগিয়ে আসায় ইলিশের চাহিদা অনেক বেড়েছে। স্বাভাবিক কারণে দামও তুলনামূলক বেশি।’ অবশ্য হিমঘরে রাখা ইলিশ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। স¤প্রতি ধরা মাছের চেয়ে সেগুলোর দাম কিছুটা কম। আবার চট্টগ্রামের ইলিশ বরিশাল ও চাঁদপুরের ইলিশের চেয়ে কম দামে মিলছে বলেও জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে প্রতি বছরই ইলিশের চাহিদা বাড়ে। বাড়তি চাহিদার যোগান দিতে বাজার ধরতে ব্যবসায়ীরা হিমঘরে ইলিশ রেখে দেন। এসময় জাটকা ধরা নিষিদ্ধ থাকায় নদীধেত অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন। ফলে দাম বেড়ে যায়। অবশ্য ইলিশ রক্ষার জন্য কয়েক বছর ধরে পয়লা বৈশাখে মাছটি না কেনার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-সহ বিভিন্নভাবে প্রচার চলছে। এমনকী সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। কিন্তু হুজুগে বাঙালি বলে কথা। কোনও বাধাই মানতে নারাজ। পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ তাদের চাই-ই চাই। তবে ছোট আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম দামে। আকার একটু বড় হলেই দাম অনেক বেশি। কেজিতে তিনটি হবে এমন আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। একেকটি ৮০০ গ্রাম ওজনের একহালি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে চার হাজার টাকা। তবে হিমঘরের মাছ হলে তা সাড়ে তিন হাজার টাকায় চাইছেন বিক্রেতারা। দর কষাকষি করলে কিছুটা কমে কেনা যায়। ইলিশ বাজার কিছুটা হতাশ করলেও, বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকা-সহ সারাদেশেই ইতিমধ্যেই জমে উঠেছে কেনাকাটা। ঢাকার ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় শপিংমলগুলো সেজেছে বৈশাখী সাজে। নানা ডিজাইনের পোশাক পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এসব পোশাকে উঠে এসেছে গ্রামীণ বাংলার রূপবৈচিত্র। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রেতা সমাগম আরও বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সংবাদ প্রতিদিন