একলাখ সাড়ে ৮ হাজার ডিমান্ডনোট ইস্যুহলেও মিলছে না আবাসিকে গ্যাস সংযোগ
শাহীন চৌধুরী: এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ঝুলে আছে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ। এলএনজি আমদানির পর আবাসিকে হগ্যাস সংযোগ দেয়া হবে মর্মে জ্বালানি বিভাগ থেকে জানানো হলেও আজও তা কার্যকর হয়নি। আর গ্যাস সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যু করে বিপাকে পড়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার অধীনস্থ ছয়টি বিতরণ কোম্পানি গত তিন বছরে নতুন গ্যাস সংযোগের আবেদনের বিপরীতে এক লাখ ৮ হাজার ৫৯৮ জন গ্রাহককে ডিমান্ড নোট ইস্যু করে। এর ফলে কোম্পানিগুলোর হিসাবে ৮৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা জমা হয়। কিন্তু গ্রাহকদের সংযোগ দিতে না পেরে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে কোম্পানিগুলো।
গ্যাস সংযোগ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটাতে বিতরণ কোম্পানিগুলোর ডিমান্ড নোট ইস্যু করা গ্রাহকদের বিশেষ বিবেচনায় সংযোগ দেয়ার জন্য গত মাসে জ্বালানি বিভাগকে চিঠি দিয়েছে পেট্রোবাংলা। জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। পেট্রোবাংলার ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আবাসিক খাতে বিতরণ কোম্পানিগুলো যেসব গ্রাহকের এরই মধ্যে ডিমান্ড নোট ইস্যু করেছে, এসব গ্রাহককে বিশেষ বিবেচনায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া যেতে পারে।
গত ২৮ মার্চ আবাসিক খাতের গ্যাস সংযোগ নিয়ে বৈঠক করে জ্বালানি বিভাগ। জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আবাসিক খাতের গ্যাস সংযোগের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে বিতরণ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, আবাসিক খাতে ছয়টি বিতরণ কোম্পানির কাছে এক লাখ ৭২ হাজার ৭৩২টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে এক লাখ ৮ হাজার ৫৯৮টি ডিমান্ড নোট ইস্যু করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, এখন সরবরাহ করা হচ্ছে বেশি দামের এলএনজি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শিল্প কারখানা ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বোচ্চ পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কোনো চিন্তা নেই। ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলো নতুন গ্যাস সংযোগ দিতে যে ডিমান্ড নোট ইস্যু করেছে ও তার বিপরীতে টাকা নিয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত ফেরতই দিতে হবে। কারণ, বেশি দামের এলএনজি কম দামে বাসাবাড়িতে সরবরাহ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
জ্বালানি বিভাগের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বাসাবাড়িতে এলপিজি ব্যবহার বাড়াতে এর দাম কমানো ও সহজলভ্য করতে কাজ করছে সরকার। সরকার বর্তমানে ৫০৭ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ করছে। তবে সেই গ্যাস অবশ্যই শিল্প কারখানা ও বাণিজ্যিক খাতে ব্যবহারের জন্য।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে সারাদেশে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫৬৬ আবাসিক গ্যাস গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকের জন্য দৈনিক ৬০২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত। সরকার গ্যাস না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আমরা ডিমান্ড নোটের বিপরীতে নেওয়া টাকা গ্রাহককে ফেরত প্রদান করবো।