সঠিক বিচার না হওয়ায় অপরাধীদের সাহস বাড়ছে, বললেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান
ফাতেমা আহমেদ : মানুষ শঙ্কার মধ্যে বসবাস করছে দাবি করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, আমাদের দেশে অনেক আইন থাকা সত্তে¡ও সঠিকভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। মানুষ সঠিক বিচার পাচ্ছে না, যার ফলে আমার মনে হচ্ছে, অপরাধীদের সাহস দিন দিন আরও বেড়ে যাচ্ছে।’ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের মরদেহ দেখতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন, ঢাকাটাইমস
কাজী রিয়াজুল বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি নারীর প্রতি, শিশুর প্রতি যৌন নির্যাতন যেভাবে বেড়ে যাচ্ছে, সেটা সমাজের জন্য একটি খারাপ বার্তা দিচ্ছে। মানুষ শঙ্কার মধ্যে বসবাস করছে। আমরা জানি না কে কখন শিকার হয়ে যাবে। এগুলোর একটি পরিসমাপ্তি ঘটা উচিত।’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দাবি করছি, যৌন হয়রানির জন্য একটা আইন করার। আদালত থেকে একটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছেÑ যৌন হয়রানির জন্য একটি কঠিন আইন করতে হবে। দ্রæততম সময়ের ভেতরে বিচার সম্পন্ন করতে হবে। অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সেই জিনিসটা এখনও করতে পারিনি।’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিন্তু আইন করে কী হবে? দুঃখ এবং হতাশা লাগে যে, নুসরাতের অকাল মৃত্যুর জন্য যাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে, তাকে যখন রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তার চেহারায় আমি কোনো অনুশোচনা দেখিনি। আমার কাছে মনে হয়নি সে ভীত সন্ত্রস্ত। তার মানে অপরাধীদের মনের ভেতরে আমরা এখনও দাগ কাটাতে পারিনি। অপরাধীরা ভীত হলে অপরাধ ঘটানোর আগে চিন্তা করতো।’
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নুসরাত প্রতিবাদ করে গেছে বলেও মন্তব্য করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নুসরাত একজন প্রতিবাদী মানুষ। অন্যায়ের কাছে, কারও যৌন লালসার কাছে নত হয়নি। নুসরাত আজকে তার নিজের জীবন দিয়ে প্রতিবাদটি করে গেলো। অনেকেই নত শিকার করে, সায় দেয়। কিন্তু নুসরাত সেটা করেনি। আমার মতে, আজকের দিনটা ‘নুসরাত ডে’ হিসেবে আমাদের স্মরণ করা উচিত। তার প্রতিবাদ আমাদের সবার কাছে শিক্ষণীয়।
নুসরাতের বিষয়ে পুলিশের আচরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রাথমিকভাবে নুসরাতের যে মানবিক মর্যাদাহানি করা হয়েছে, তারও বিচার হওয়া উচিত। থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুধু প্রত্যাহার না, বিষয়টি তদন্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান