টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল এবং সুদবিহীন গৃহ নির্মাণ ঋণ চান সচিবালয়ের কর্মচারীরা
সোহেল রহমান : পূর্বের নিয়মে ইনক্রিমেন্ট, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল কিংবা বর্তমানে ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধির পরিবর্তে বছরে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বৃদ্ধি; পেনশন ভাতা শতকরা ২৩০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকায় উন্নীত করা ও পূর্বের নিয়মে পেনশন ভাতা উত্তোলন এবং গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমা তুলে দেয়া ও সুদবিহীন গৃহ নির্মাণ ঋণ চায় ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’। গত বুধবার সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, নতুন বেতন স্কেলে পূর্বের নিয়মে ইনক্রিমেন্ট, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড সিস্টেম বাতিল এবং এর পরিবর্তে বছরে ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি সিস্টেম চালু করায় সচিবালয়ে কর্মরত চতুর্থ, তৃতীয় ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা আর্থিকভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিদ্যমান হারে ২০তম গ্রেডের একজন কর্মচারীর বছরে মোট বেতন বাড়ে ৪১২ টাকা এবং একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বাড়ে ৪০০০ টাকা। যার দ্বারা ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু পূর্বের নিয়ম বহাল থাকলে কর্মচারীরা অনেক বেশি উপকৃত হতো। তাই পূর্বের নিয়মে ইনক্রিমেন্ট, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল কিংবা বর্তমানে ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধির পরিবর্তে বছরে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ।
পেনশন ভাতার বিষয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারীর মোট পেনশন যদি ২০ লাখ টাকা হয়, তাহলে বর্তমান বিধান অনুযায়ী এর অর্ধেক সরকারের কাছে বিক্রি করলে ১০ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু এ পরিমাণ টাকা দিয়ে একটি মুদির দোকান করাও সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় পেনশন ভাতার হার শতকরা ২৩০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা এবং পূর্বের নিয়মে (তথা শতভাগ পেনশন বিক্রি) পেনশন উত্তোলনের সুযোগ চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বয়সসীমা তুলে দেয়া ও সুদবিহীন গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ। প্রসঙ্গত বিদ্যমান নীতিমালায় সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রাপ্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৮ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এর সুদের হার হচ্ছে ৫ শতাংশ সরল সুদ। অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সুদ বহন করবে সরকার। এ বিষয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, চাকরির বয়স পাঁচ বছর হয়েছে এমন একজন কর্মচারীর মূল বেতন দাঁড়াবে আনুমানিক ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং সর্বসাকুল্যে বেতন হবে ১৮ হাজার টাকা। ওই কর্মচারী যদি ৪০ লাখ টাকা গৃহঋণ নেয় তাহলে ৫ শতাংশ হারে সুদসহ ঋণের কিস্তি বাবদ প্রতিমাসে তাকে প্রায় ১৮ হাজার টাকা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ওই কর্মচারীর ঋণের কিস্তি কতো হবে এবং তার সংসার কীভাবে চলবেÑএটি বোধগম্য নয়। এমতাবস্থায় সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার জন্য সুদবিহীন ২০ লাখ টাকা ঋণ প্রদান কর্মসূচীর আদলে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে সুদবিহীন ৩০ লাখ টাকা গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে, যা ২০ বছর মেয়াদে পরিশোধ করা হবে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান