বৈরী আবহাওয়ায় ক্ষতির মুখে হাওরের৪৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান
ফাতেমা আহমেদ : ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলতি মৌসুমে ৪৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, দমকা হাওয়া, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বোরোসহ নানা ফসল আক্রান্ত হয়েছে। সূত্র : সারাবাংলা
অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের তথ্যমতে সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নওগাঁ, বগুড়া, জয়পুরহাট, কুমিল্লা, নড়াইল, হবিগঞ্জ ও রাজশাহী জেলায় বোরো ধান আক্রান্ত হয়েছে। এসব জেলায় আবাদ হওয়া ৮ লাখ ২৩ হাজার ১৫৩ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৪ হাজার ১৬০ হেক্টরের বোরো ধান।
এদিকে, হাওর অঞ্চলের ৭ জেলায় বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। হাওর এলাকায় এ পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৩ শতাংশ জমির ধান। কৃষকরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়া দীর্ঘস্থায়ী হলে বোরো ধান উত্তোলনে তাদের বেগ পোহাতে হবে।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সুনামগঞ্জে ২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমির মধ্যে ৩২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমির বোরো ধান আক্রান্ত হয়েছে। অন্যান্য জেলার বোরো ধানেরও কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে, সুনামগঞ্জেই আক্রান্তের হার বেশি। ৩১ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত এই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
চলতি বছর সারাদেশে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৮ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। তবে আবাদ হয়েছে ৪৯ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে। সমপরিমাণ জমিতে এবার বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৯৬ লাখ মেট্রিক টন।
ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বোরো ধান চিটা হয়ে গেছে বলে জানান কৃষকরা। নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলেও বোরো ধানে চিটা দেখা দিয়েছে। ধানের প্রত্যাশিত ফলন না হওয়ায় কৃষকদের চোখেমুখে হতাশার ছায়া। জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গিউথা হাওর, খুরশিমুল, শিয়াদার, তেঁতুলিয়া, গাগলাজুর, সুয়াইর ও হাঁটনাইয়াসহ বিভিন্ন হাওরে ব্যাপক চিটা দেখা দিয়েছে।
নেত্রকোনার হাওরে চিটা দেখা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, ‘হাওরের প্রায় ছয় হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান আক্রান্ত হয়েছে।’
শুধু ধান নয়, গত ৩১ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে গম, ভুট্টা, শাকসবজি, পান, লিচু ও আমসহ বিভিন্ন ফসল। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান